জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করে ‘বালিপাড়া ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ পেয়েছেন সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির পেয়েছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্যের ল্যান্ডমার্ক ইকোনমিকস অব বায়োডাইভারসিটি রিপোর্ট ফর দ্য ইউকের লেখক স্যার পার্থ দাশগুপ্তসহ ১৫ ব্যক্তি। তাদের মধ্যে রয়েছেন আরও সাত জন বাংলাদেশি।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়। রাজধানীর ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) অডিটরিয়ামে এই আয়োজন করা হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্ত সাত বাংলাদেশি হলেন– বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খান, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর চেয়ারম্যান গোলাম মাঈনউদ্দিন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, খাগড়াছড়ির পার্বত্য পিটাছড়া বনাঞ্চল সংরক্ষণে কাজ করা মাহফুজ আহমেদ রাসেল, প্রাকৃতিক কৃষি বিপণন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা দেলোয়ার জাহান, বন বিভাগের রেঞ্জার ও করমজল কুমির প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির এবং আইইউবির উপ-উপচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।
দশম ইস্টার্ন নেচারনোমিকস ফোরামের তিন দিনের (১১-১৩ ডিসেম্বর) আয়োজনে প্রথম দিন দুটি প্যানেল আলোচনা হয়। সেখানে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এবং ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শ্যাম সরণ।
বালিপাড়া ফাউন্ডেশন ২০১৩ সালে প্রথম তাদের নামে পদক ঘোষণা করে। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত হিমালয়ের পূর্বাঞ্চলে সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অসামান্য ভূমিকা রাখা ১২০ জনকে পুরস্কৃত করেছে সংগঠনটি। পুরস্কারপ্রাপ্ত তৃণমূল পর্যায়ের এসব কর্মী ও নেতার প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত দুই হাজার হেক্টরের বেশি এলাকায় পুনর্বনায়ন এবং ৬০০টির বেশি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া তাদের কাজের জন্য ২ হাজার ৮০০-এর বেশি লোকের জীবিকা সুরক্ষিত হয়েছে।
সুন্দরবন বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন মূলত আমি বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছি। বিলুপ্ত প্রজাতির লবন পানীর কুমির এবং বাটাগুর বাস্কা জাতের কচ্ছপের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে বনের ভিতরে সরকারি ভাবে একটি প্রজনন কেন্দ্র করা হয়েছে, সেখানে লবন পানির কুমিরের বাচ্চা উৎপাদন করে লালন পালন করে পরিবেশের সাথে খাপ খায়িয়ে চলার মতো করে সুন্দরবনের নদিতে অবমুক্ত করে থাকি। এ পযন্ত ৫০০টি লবন পানির কুমিরের বাচ্চা উৎপাদন করা হয়েছে যার মধ্যে ২০০টি সুন্দরবনের নদী খালে অবমুক্ত করা হয়েছে।
ভারতের আসাম ভিত্তিক বালিপাড়া ফাউন্ডেশন ২০১৩ সাল থেকে জীববৈচিত্র সংরক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে একটি অলাভজনক সংস্থা হিসেবে কাজ করে আসছে এবং রুরাল ফিউচার রিওয়াইল্ডিং, ফুড ফর দ্য ফিউচার, ফরেস্ট গার্ডস অ্যান্ড রেঞ্জার্স, লাইফটাইম সার্ভিস, ন্যাচারনোমিক্স, গ্রিন জার্নালিস্ট, গ্রিন লিডার ও ইয়াং ন্যাচারালিস্ট ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।