বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা জীবন দিয়ে লড়াই করছি, পেছন ফিরে তাকানোর সময় নেই। আমাদের অনেক ভাই চলে গেছে, অনেক রক্ত ঝরেছে। আমাদের অনেক মা-বোনের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে; অনেক সন্তান পিতৃহারা হয়েছে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক যুব-সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করে যুবদল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা লক্ষ্য করছেন যে ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি টিম এসেছিল। এই দলটি কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কোনো প্রতিনিধি দল নয়। তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন দল। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই দলের থিংক ট্যাংক। তাদেরকে পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশের নির্বাচনের কোনো পরিবেশ আছে কিনা এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য বড় কোনো টিম পাঠাবে কিনা তা দেখার জন্য। এটাই তাদের উদ্দেশ্য। তারা ৫ দিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ এবং নির্বাচন কমিশন সবার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা যাওয়ার আগে একটি বিবৃতিতে দিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা ৫টি সুপারিশ করেছেন। সেখানে প্রধান কথা হচ্ছে-সংলাপ।
তিনি আরও বলেন, সেটার জবাব দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন—আমরা তখনি আলোচনায় বসতে রাজি আছি যখন বিএনপি সমস্ত শর্ত বাদ দিয়ে আলোচনায় আসবে। সবার আগে আওয়ামী লীগের কাছে প্রশ্ন– আপনারা যে সরকারের বসে আছেন, সাংবিধানিকভাবে কি বৈধ? আমি প্রমাণ করছি যে আপনারা (সরকার) সাংবিধানিকভাবে বৈধ নয়। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করেছেন। তার প্রমাণ যে রায়ের বদৌলতে, যেটা আপনারা দেখান, সেই রায়ে বিচারপতি খায়রুল হক বলেছেন, এটা প্রাসঙ্গিক নয়, তবে দেশের স্বার্থে আরও ২টি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে। সেই রায় ১৬ মাস পরে পূর্ণাঙ্গ বের হয়েছিল যেটার সঙ্গে আগেরটা কোনো মিল ছিল না। রায়ে প্রকাশের আগেই আওয়ামী লীগ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে সংসদে আইন পাস করেছে।
তরুণদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, একটা কথা খুব জোর দিয়ে বলতে হবে— এই সরকার শুধু ভোট চোর নয়, তারা অবৈধ সরকার। সারা পৃথিবীকে জানাতে হবে তারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছেন। এই জন্য আমরা বলেছি, আগে পদত্যাগ করেন, সংসদ বাতিল করেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
পুলিশের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা জানি পুলিশের সবাই খারাপ করতে চায় না। বেআইনিভাবে কাজ করতে চান না। এই আওয়ামী লীগ বাধ্য করছে বেআইনিভাবে, আইনের শাসনকে দূরে রেখে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করার জন্য।
খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে জোর করে বন্দি করে রাখা হয়েছে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তার জন্য একদিন তাদেরকে (সরকার) জনগণের সামনে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষ করে যেসব বিচারক এই আদেশ দিয়েছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। জনগণের সামনে তার জবাবদিহি করতে হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ