পানির অপর নাম জীবন-সেই জীবন বাঁচানো পানি নিয়েই জীবননগরে শুরু হয়েছে প্রতারণা। পানি উৎপাদনের জন্য বিএসটিআই এর নেই কোন অনুমোদন, লাইসেন্স, পরীক্ষা কেন্দ্র আর এ সমস্থ ছাড়াই প্রকাশ্যে জীবননগর শহরে স্থাপন করা হয়েছে পানির কারখানা। লাইসেন্স ছাড়াই ২০১৮ সাল থেকে জারের মাধ্যমে পানি উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে টেকনো গ্রপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানী পিউর ড্রিংকিং ওয়াটার এবং মিম ওয়াটার নামের দুটি কারখানা। ছোট আকারের পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট বসিয়ে জীবননগর পৌর সভা থেকে শুধু মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটি জারে ভরে পানি বাজারজাত করছে।
জীবননগর পৌর শহরের নারায়নপুর মোড় টেকনো গ্রপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানী পিউর ড্রিংকিং ওয়াটার এবং জীবননগর পৌর সভার পোষ্ট অফিস পাড়ায় অবৈধ ভাবে কারখানা দুইটি স্থাপিত হয়েছে। জীবননগর শহরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দুটি পানির খানার কাগজপত্র না থাকলেও এখনও পর্যন্ত প্রশাসনিক ভাবে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা যার ফলে, তারা প্রকাশ্যে বাজারজাত করছে পানি। আর এ সমস্থ পানি পান করে সাধারন মানুষের যে শারীরিক ভাবে সমস্যা হবে না তা বলা মুশকিল। এ দুটি কারখানার পানি জীবননগর শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্কুল এমন কি বাসা বাড়িতে ও ব্যবহার করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, “টেকনো গ্রপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানী পিউর ড্রিংকিং ওয়াটারে অনেক ক্ষেত্রে পানি পান করতে সমস্যা হয়। পানিতে বিলিসিং পাউডার গন্ধ করে , পানিটা অনেক তেত লাগে এবং কয়েক দিন পানিটা রাখলে জারের মধ্যে সাদা ধরনের ময়লা দেখা দেয়। আমরা একাধীকবার বলা সত্বেও পানিটা পরিস্কার করেনি।”
টেকনো গ্রপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানী পিউর ড্রিংকিং ওয়াটারের মালিক সাদিকুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “আমার বিএসটিআই এর অনুমোদন নেই । আর এই ছোট ছোট প্লান্টের জন্য বিএসটিআই অনুমোদন দেয় না । আমি শুধু পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে পানির ব্যবসা করছি। ”
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও ) ডাঃ মাহমুদ বিন হেদায়েত সেতু বলেন, যদি বিশুদ্ধপানি পান না করা হয় তা হলে ডায়রিয়া, লিভারের সমস্যাসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে। তা ছাড়া বাজারে এখন দুই ধরনের পানি বাজারজাত হচ্ছে একটি ড্রিংকিং ওয়াটার এবং মিনারেল ওয়াটার। তবে ড্রিংকিং ওয়াটারটা দায় সারা মত বাজার জাত করছে। তবে পানি পান করতে হলে অবশ্যই পরীক্ষা করে পান করা উচিত।
জীবননগর উপজেলা জনস্বাস্থ্যের সহকারী প্রকৌশলী রাজিব হোসেন রাজু বলেন, জীবননগর শহরে যে দুটি পানির কারখানা আছে এটা আমাদের কেউ জানাইনি এবং দুটি কারখানার কেউ আমাদের কাছে পানি পরীক্ষার জন্য আসেনি। তবে তারা যদি পানি পরীক্ষা করার জন্য আমাদের অফিসে আসে তবে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
জীবননগর পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, জীবননগর শহরে যে দুটি পানির কারখানা আছে এটা আমি শুনেছি। ব্যবসার জন্য পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সবাই নিতে পারে তবে পানির কারখানা পরিচালনা করার জন্য যে সমস্থ কাগজপত্র থাকার দরকার সে সমস্থ কাগজপত্র না থাকলে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি