দু’দিনের সফরে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। আগামীকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। হাইকমিশনারের সফরে বিভিন্ন বৈঠকে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুমসহ অন্য বিষয় প্রাধান্য পাবে।
গতকাল সোমবার ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আজ দু’দিনের সফরে আসছেন জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। মঙ্গল ও বুধবার তিনি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন একটি কার্যালয় স্থাপন করতে চায় জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, সেপ্টেম্বরে ভলকার তুর্কের ঢাকায় আসার কথা ছিল। কিন্তু সময় জটিলতার কারণে তা পিছিয়ে এ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা ও ভলকার তুর্কের সাক্ষাৎ হয়। সেই বৈঠকে কার্যালয় স্থাপনের বিষয়টি উঠে আসে। এ সফরে অন্য ইস্যুর পাশাপাশি কার্যালয় স্থাপনের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
বিশ্বে মাত্র ১৯টি দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় রয়েছে। এ কার্যালয়গুলো থেকে প্রধানত মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ, সুরক্ষা, গবেষণা, সরকার, জাতীয় কর্তৃপক্ষ, নাগরিক সমাজ, ভুক্তভোগী ও অন্য প্রাসঙ্গিক সহযোগীদের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জনসাধারণের প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়। যেসব দেশে এ ধরনের কার্যালয় থাকে, সেখানে অবারিত প্রবেশাধিকার থাকে।
ফলে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কোনো সফর করতে হলে আলাদা করে সে দেশের সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হয় না।
আজ ভোরে ঢাকায় নামার কথা রয়েছে ভলকার তুর্কের। বেলা ১১টায় সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং পুলিশ মহাপরিদর্শকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তাঁর সঙ্গে শিল্প উপদেষ্টা, পরিবেশ উপদেষ্টা, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, ক্রীড়া উপদেষ্টা, প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে মধ্যাহ্ন বৈঠকে অংশ নেবেন।
বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। এরপর বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। রাতে মানবাধিকারপ্রধানের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেছেন ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী।
আগামীকাল সকালে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংস্কার কমিটির প্রধানগণ এবং জোরপূর্বক গুমবিষয়ক কমিশনের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন ভলকার তুর্ক। সকাল ১০টার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর সেনাসদরে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) গণআন্দোলনের আহতদের দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের। বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এইচ