আজ বুধবার (২ আগস্ট) জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানি আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসিরায়)’র ১৬২ তম জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে বিজ্ঞানীর জন্মভিটা খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাড়–লীতে জেলা, উপজেলা ও স্থানীয় ইউপি’র উদ্যোগে নানা কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
সকাল ১১ টায় জন্মভিটায় স্থাপিত ম্যুরাল (প্রতিকৃতিতে) মাল্যদান, এরপর তথ্য চিত্র প্রদর্শন ও পরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য (এমপি), বিশেষ অতিথি ছিলেন, খুলনা-৬ সংসদ (পাইকগাছা-কয়রা) সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু, খুলানা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, স্যার পিসি রায় স্মৃতি সংরক্ষন পরিষদের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, রাড়লী ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা, সাংষ্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব, সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা সূধী সমাজের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম।
এর আগে মন্ত্রী স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বসত ভিটা চত্ত্বর ঘুরে দেখেন।
প্রসঙ্গত, বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপোতাক্ষ বিধৌত রাড়লীতে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম জমিদার হরিশ চন্দ্র রায়, মাতা ভুবণ মোহিনী দেবী। তিনি একাধারে ছিলেন রসায়নবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক, দানবীর, সমাজসেবক, রাজনীতিবীদ, দার্শনিক, অর্থনীতিবীদ ও সমবায় দর্শনের প্রবক্তা। দেশ বিদেশে তার নামে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১৯৪৪ সালে ১৬ জুন ৮৩ বছর বয়সে জগদ্বিখ্যাত এ বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে চিরকুমার কুমার অবস্থায়। জীবদ্দশায় তিনি তাঁর সারা জীবনের অর্জিত সম্পদ- সম্পত্তি মানব কল্যাণে দান করে গেছেন।
শিল্পপতি, রসায়নবিদ, সমাজ সেবক, রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সমবায় আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন তিনি। ১৮৯২ সালে তিনি কলকাতার মানিক তলায় মাত্র ৮’শ টাকা পুঁজি নিয়ে বেঙ্গল কেমিক্যাল এ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেন। জন্মভূমি রাড়ুলীসহ খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কাপড়ের মিল ও রাড়ুলীতে উপমহাদেশে সর্বপ্রথম সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তিনি একাধারে ২০ বছর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়ন শাস্ত্রের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন একাধারে ২০ বছর। ১৯৩০ সালে তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। এছাড়া একই বছর লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৩৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ভারত বর্ষের মহীশুর ও বেনারস বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মান সূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেন।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদুল