নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হবে। পরে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন হলে তাকে ডেকে নেওয়া হবে। শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ের গেটে এ তথ্য জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, কিছু বিষয়ে জানতে চয়নিকা চৌধুরীকে এখানে আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে পরে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাকে ডেকে নেওয়া হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পান্থপথ এলাকা থেকে চয়নিকাকে হেফাজতে নেয় ডিবি। পরে তাকে মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় বেসরকারি একটি টিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে বের হয়ে আসার পর চয়নিকার গাড়ি আটকায় ডিবি পুলিশ। সেখানে কিছুক্ষণ তার সঙ্গে কথা বলেন ডিবির কর্মকর্তারা। পরে হেফাজতে নেওয়া হয় চয়নিকাকে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারের পর রিমান্ডে থাকা মডেল পিয়াসা, মৌ ও পরীমণিকে ব্যবসায়ী ও উঠতি বয়সী ধনী তরুণদের নিয়ে ডিজে পার্টি করা এবং মাদকের আসর বসানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এসব জিজ্ঞাসাবাদে কারো কারো কাছ থেকে চয়নিকা চৌধুরীর নাম বেরিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এছাড়া চয়নিকার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিনেত্রী ও অভিনেতার সঙ্গে প্রেম করিয়ে দেওয়া, বিচ্ছেদে সহযোগিতা, মাদক সরবরাহসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে তাকেও গ্রেফতার করা হবে।
চয়নিকা চৌধুরী বাংলাদেশের একজন আলোচিত পরিচালক। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শেষ বেলায়’ নাটকের মধ্য দিয়ে পরিচালনা শুরু করেন তিনি। ‘বিশ্বসুন্দরী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। সে সিনেমার নায়িকা পরীমণি।
৪ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগীকে আটক করে র্যাব। তার বাসা থেকে নানা মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। আটকের পর তাকে নেওয়া হয় র্যাবের সদর দফতরে। রাতভর সেখানেই থাকতে হয় পরীমণিকে।
পরদিন ৫ আগস্ট মাদক মামলা করে র্যাব। একই দিন তাকে আদালতে পাঠিয়ে ৪ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। মামলাটি প্রথমে ডিবিতে, পরে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।
গত ১৩ জুন রাতে ফেসবুক পোস্টে পরীমণি অভিযোগ করেন, ৯ জুন উত্তরার বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা চালান ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগীরা। পরে এ ঘটনায় সাভার থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন পরীমণি।
বোট ক্লাব কাণ্ডের পর পরীমণির পাশে দেখা যায় চয়নিকা চৌধুরীকে। কিন্তু গত ৪ আগস্ট পরীমণি আটক হওয়ার পর তাকে আর পাশে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে অবশ্য চয়নিকা গণমাধ্যমে বলেছেন, পরীমণির সঙ্গে তার যোগাযোগ ও আড্ডা নিতান্ত পেশাগত কারণে। দুজনের মধ্যে অন্য কোনো সম্পর্ক নেই।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি