সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সারাদেশে ১০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। পৃথক ওই ১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত ও ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলে ছয় জন, মানিকগঞ্জে সাতজন, রাজধানীতে একজন, নরসিংদীতে একজন, ভোলায় একজন, নাটোরে একজন, বগুড়ায় একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে একজন, মাগুরায় তিনজন। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ইচাইল এলাকায় বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন।

নিহত ছয়জনের মধ্যে রয়েছে ট্রাকের হেলপার রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার শমসের হাট গ্রামের মো. রতন মিয়ার ছেলে মো. চুন্নু মিয়া (৩২), ধলনাকান্দি গ্রামের জয়নাল হোসেনের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৪) ও পারভেজ আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলামের (৬১) নাম জানা গেছে। বাকি তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

দুপুরে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার মুলকান্দিতে বাস ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত হয়েছে সাতজন। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম এ তথ্য জানান। বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের ছয় সদস্যসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন অটোরিকশার চালক বলে জানা গেছে।

এদিকে সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মানিকদিয়া এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় ইফতিখার ইফতি (১৮) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হন। এ তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ক্যম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য ইফতির মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। আহত অনন্তের দুই পা ও হাতে আঘাত লেগেছে। তাকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ফজরের নামাজ শেষে নাটোরের সদর উপজেলার হয়বতপুর এলাকায় নাটোর-বনপাড়া মহাসড়কে রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসের ধাক্কায় মো. আলাল ফকির (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের ঝলমলিয়া ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. রেজওয়ানুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।

অপরদিকে দুপুরে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার জামতলা এলাকায় পিকআপভ্যান ও শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নসিমন ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে ইউসুফ আলী (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

ভোলায় ভোলা-চরফ্যাশন সড়কের বাংলাবাজার পল্লীবিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে ট্রলির ধাক্কায় নিজাম উদ্দিন মিরন (৪৫) নামে এক মোটরসাইকেলআরোহী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন তার সঙ্গে থাকা অপর দুই আরোহী। এ খবর নিশ্চিত করে ভোলার বাংলাবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনাস্থলেই মিরন মারা যান।

আবার বিকেলে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় ধান বোঝাই অটোভ্যানের চাপায় জাহিদ হাসান (৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জাহিদ হাসান নন্দীগ্রাম উপজেলায় ভাটরা ইউনিয়নের বেলঘড়িয়া গ্রামের ফারুক আহম্মেদের ছেলে।

মাগুরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রামনগর ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সবজি বোঝাই ট্রাক উল্টে একই পরিবারে দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহত দু’জন হলেন-স্বর্ণা চক্রবর্তী (২৫) ও তার বড় ভায়ের স্ত্রী সাথী (৩০)। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাগুরা রামনগর হাইওয়ে পুলিশ পরিদশক মো. শাহজালাল বাবুল।

এদিকে মাগুরার রাজাপুর এলাকায় মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহাদ আলী মোল্ল্যা (৬০) নামে এক পল্লী চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। আহাদ আলী নড়াইলের কালিনগর এলাকার আবু হোসেন মোল্ল্যার ছেলে।

সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইসলামাবাদ এলাকায় বাসচাপায় বাহা মিয়া (৭০) নামে এক পথচারী নিহত হয়।

সরাইল খাটাহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান এ খবর নিশ্চিত করে জানান, সন্ধ্যায় টি আর পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সিলেট থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলো। এ সময় বাহা মিয়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইসলামাবাদ এলাকার রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় দ্রুতগামী বাসটি তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

খুলনা গেজেট / এআর