খুলনায় আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা সৈকত রোহান হত্যা মামলায় আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার খুলনার বিভাগীয় জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরো এ নির্দেশ প্রদান করেন।
সৈকত রোহান হত্যা মামলায় আসামিদের খালাসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মো. ছাহেদুল হক শাহিন।
সৈকত রোহান হত্যা মামলায় আসামিদের খালাসের বিষয়ে ওই আদালতের পিপি আরিফ মাহমুদ লিটন প্রথমে কোন মন্তব্য করতে চাননি। পরবর্তীতে তিনি বলেন, উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় সৈকত রোহান হত্যা মামলার সকল আাসামি খালাস পেয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নগরীর পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার দু’ভাই মিজান ওরফে দাদো মিজান শেখ (৩৮) ও মিরাজ শেখ (৩৩)। তারা বাগেরহাট জেলার মোরলগঞ্জ থানার নাতাবাড়িয়া গ্রামের সেকেন্দার শেখের ছেলে। পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট ৯নং গলির শেখ জাহাংগীরের দু’ছেলে আল আমিন (৪০) ও তৌহিদ শেখ (২৮), ৩১/১, মিস্ত্রিপাড়া খালপাড় রোডের আবুল কালামের ছেলে মুরাদ ওরফে কালা মুরাদ (৩০), পূর্ব বানিয়াখামার আব্দুল হক সড়ক ড্রেন গলির আজিজ শেখের ছেলে ইকরাম ওরফে একরাম শেখ (৪৫), পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট বিসমিল্লাহ মহল্লার আব্দুল হাকিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া নজরুল ইসলাম শিকদারের ছেলে মো. ইব্রাহিম শিকদার ওরফে খবিস (২২), ২৬/৪৩, পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট চৌধুরী গলির মৃত. হাফিজুর রহমান সরদারের ছেলে হাসানুজ্জামান সরদার ওরফে আকাশ ওরফে কালা আকাশ (২৮), ১/ক, শেখপাড়া বাগান বাড়ির শহীদ আবুল সড়কের সাত্তার বিশ্বাসের ছেলে তুহিন ওরফে কালা তুহিন (২৮), ৫৭ আহসান আহম্মেদ রোডের রুস্তুম আলীর ছেলে মো. ইব্রাহিম আলী ওরফে রাজন (২৬), পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার শেষ ঠিকানা গলির মো. বাবুল মাতুব্বরের ছেলে রিয়াজুল (৩২), ১৯/ক মিয়াপাড়া বাগানবাড়ির সিরাজের বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. বেল্লাল শেখ (২২), সে বাগেরহাট জেলার মোরলগঞ্জ থানার কাচিকাটা গ্রামের মো. হারুন শেখের ছেলে, মিয়াপাড়া পাইপের মোড়ের হায়দারের বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. অধব্দুর রাজ্জাক (২৯), ২০ পূর্ব বানিয়াখামারের মৃত. হাজী আশরাফ আলীর ছেলে মো. জয়নাল আবেদীন ওরফে জনি (৩৫) ও ২২ রোকন উদ্দিন সড়কের মো. আবু আনসারীর ছেলে মো. শাহদাত আনসারী ওরফে ছোট (২৪)।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট রাত পৌনে ১১ টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা সৈকত রোহান নগরীর আহসান আহমেদ রোডস্থ পিটিআই মোড় সংলগ্ন তপন স্টোরের সামনে অবস্থান করছিল। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে যায়। পরবর্তীতে তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে খুলনা জেনারেল হাসপাতাল ও পরবর্তীতে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের মা ঘটনার পরেরদিন থানায় বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন, যার নং ২।
২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি ১৫ জন আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সিআইডি এস আই মো: শফিউল আলম ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ১৫ জন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বুধবার আদালতে ১৪ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রায় ঘোষণার জন্য কয়েকটি দিন ধার্য করেও তা পরিবর্তন করে আদালত।
খুলনা গেজেট/ এসজেড