যশোরের চৌগাছায় ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে এক স্বামী। দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করায় স্বামী প্রথম স্ত্রীকে বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেছে। বর্তমানে আহত স্ত্রী চৌগাছা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নে স্বর্পরাজপুর গ্রামে।
আহতের স্বজনরা জানান, ২০০৮ সালে উপজেলার স্বর্পরাজপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের মেয়ে জলি বেগমের (৩২) সাথে একই গ্রামের গহর আলীর ছেলে আবুল বাশারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর হতেই জলি বেগম তার পিতৃলয়ে থাকেন। দাম্পত্য জীবনে তারা ১২ বছরের এক ছেলে ও ১০ বছরের এক মেয়ে সন্তানের জনক জননী। ২০২১ সালে স্বামী আবুল বাশার কাউকে কিছু না জানিয়ে পাশ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামের ববিতা খাতুন নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনা নিয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। জলি বেগম ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সরোনাপন্ন হয়েও কোন ফল না পেয়ে গেল বছরের ১৭ নভেম্বর যশোর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিঃ ম্যাজিঃ আমলী আদালতে মামলা করেন। মামলা হওয়ার পর তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে স্বামী আবুল বাশার। মামলা তুলে নিতে চলে নানা ভাবে হুমকি ধামকি। শনিবার দুপুরে জলি বেগম এক নিকট আত্মীয়র বাড়ি হতে পিতৃলয়ে ফেরার পথে গ্রামের লালুর বাড়ির সামনে পৌছালে সেখানে পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা স্বামী আবুল বাশার তার লোকজন জলি বেগমের গতীরোধ করে মামলা তুলে না নেয়ার অপরাধে বেধড়ক মারপিট করে সড়কে ফেলে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে আহতের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত জলি বেগম জানান, আবুল বাশার পছন্দ করেই আমাকে বিয়ে করে, গায়ের রং কালো হওয়ায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেনে নেয়নি। দীর্ঘ সংসার জীবনে সে শ্বশুর বাড়িতে যেতে পারেনি। পিতার বাড়িতে থাকলেও স্বামী আবুল বাশার নানা সময়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা নেয় আমার পিতার কাছ থেকে। সে প্রায় দিনই তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে আমার উপর শারীরিরিক ও মানসিক নির্যাতন করলেও আমি প্রতিবাদ করেনি। এরই মধ্যে দ্বিতীয় বিয়ে করে আমাকে ছেড়ে তার পিতৃলয়ে বসবাস শুরু করেছে।
এ বিষয়ে আবুল বাশারের ব্যবহৃত ০১৬০৯১৪৫০৫০ নম্বর মোবাইল ফোনে বারবার কল দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। জগদীশপুর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাষ্টার সিরাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বামীর হাতে স্ত্রী আহত ঘটনাটি নিঃসন্দে দুঃখজনক। এ ধরনের অপরাধ কোন ভাবেই মেনে নেয়ার মত না। দ্রæত সময়ের মধ্যে দুই পরিবারকে নিয়ে বসে একটি সুন্দর সমাধানে আসা হবে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/ টি আই