চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মুক্তা মালা (৩২) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে ভণ্ড পীরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাত ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার এরশাদপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগের রাতে বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার এরশাদপুর গ্রামের ইছাহক আলীর ছেলে জহুরুল ইসলাম (৩৫), তার মা জহুরা বেগম (৫০) ও মৃত মুনছুর আলীর ছেলে ভণ্ড পীর সালাউদ্দীন ওরফে পান্টু হুজুর।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাথানপাড়ার আব্দুর রশিদ অসুস্থ হলে তিনি তার মেয়ে মুক্তা মালাকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে যান আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রামের পান্টু হুজুরের দরবারে। ওই সময় পান্টু হুজুরের খাদেম হিসেবে পরিচিত ইছাহক আলীর ছেলে জহুরুল ইসলামের সঙ্গে মুক্তামালার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ৬-৭ মাস আগে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর মুক্তামালা স্বামীর সঙ্গে পান্টু হুজুরের দরবারেই বসবাস করতেন।
হুজুরের খাদেম হিসেবে ওই দরবার শরীফে আরও অনেক নারী ও পুরুষ বসবাস করেন। বিয়ের পর থেকে জহুরুলের মা জহুরা বেগম পুত্রবধূ মুক্তা মালাকে ভালোভাবে নেননি। রোববার সকাল ৮টার দিকে মুক্তা মালার মরদেহ পান্টু হুজুরের ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে মরদেহ দরবারের নিজস্ব ভ্যানে করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি কাউকে না বলতে হুমকিও দেওয়া হয়।
দুপুরে নিহতের বাবা আব্দুর রশিদ মরদেহ নিয়ে আলমডাঙ্গা থানায় আসেন। রাত ১০টার দিকে মুক্তার বাবা বাদী হয়ে জহুরুল ইসলাম ও পান্টু হুজুরসহ ৪ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযান চালিয়ে জহুরুল ইসলাম, তার মা জহুরা বেগম ও সালাউদ্দীন পান্টু হুজুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বাদি আব্দুর রশিদ জানান, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের ওপর শাশুড়ি, স্বামী ও ভণ্ড পীর পান্টু অত্যাচার করতো। তারা পরিকল্পনা করে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি তাদের শাস্তি চাই।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর বলেন, নিহত মুক্তা মালার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। গ্রেপ্তারকৃতদের সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হবে। পান্টু হুজুরকে এর আগেও বেশ কয়েকবার ইসলাম ধর্মকে বিকৃত করা, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করাসহ নানা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম