চীনের উপহার হিসেবে দেয়া ৫ লাখ ডোজ করোনার টিকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, এই টিকা প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় কমিটি।
এদিকে বাংলাদেশ শিগগির ভারত থেকে সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত ‘কোভিশিল্ড’ ভ্যাকসিন পাচ্ছে না। শনিবার ভারতীয় হাইকমিশনের একটি চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, কাঁচামালের সংকট ও ভারতে বিপুল অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে ভ্যাকসিন সরবরাহে দেরি হচ্ছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এ চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারত তার অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাকসিন সরবরাহের যেসব চুক্তি করেছিল, সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিন উৎপাদনের চেষ্টা চলছে।
ভ্যাকসিনের কাঁচামাল রপ্তানিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়ে এতে আরও বলা হয়েছে, প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলো কাঁচামাল আটকে দিয়েছে, এ বিষয়টিও সবার জানা। এতে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরামের ওপর প্রভাব পড়েছে।
ভারতের হাইকমিশনের এ চিঠির এটাই অর্থ যে, কাঁচামালের সংকট উত্তরণের পরই সেরাম থেকে ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ।
চিঠিতে ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ যৌথ উত্পাদনের বিষয়ে হাইকমিশন বলেছে, আইসিডিডিআর,বি এবং ভারত বায়োটেক ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কোভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য চুক্তি করেছিল। তবে, সেটা এখনও বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা কোভিশিল্ডের চেয়ে বেশি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘আমাদের বর্ধিত সক্ষমতা ও একাধিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ যদি কোভ্যাক্সিন যৌথভাবে উৎপাদন শুরু করে তবে বাংলাদেশে তৈরি ভ্যাকসিন ভারতসহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোতে সরবরাহ করা হবে। ‘সেই সুযোগটি এখনও হারিয়ে যায়নি। আমরা এর সদ্ব্যবহার করতে পারি,’ যোগ করা হয়েছে চিঠিতে।
বাংলাদেশের সরকার গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য সেরামের সঙ্গে চুক্তি সই করে। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, এ পর্যন্ত দুই কিস্তিতে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারত সরকার উপহার হিসেবে ৩৩ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠিয়েছিল।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ভারতীয় হাইকমিশনকে চিঠি দিয়ে ভ্যাকসিন সরবরাহের বিষয়ে তথ্য চেয়েছিল। সূত্র : ডেইলি স্টার।
খুলনা গেজেট/এনএম