বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ‘বাঘ তাড়ানো আলোকরশ্মি’ যন্ত্রের আবিষ্কারক পাঁচ ক্ষুদে বিজ্ঞানীকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে উপহার হিসেবে তাদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা চিতলমারীর সন্তান আমেরিকান দুই বিজ্ঞানীর মা শ্যামলী বিশ্বাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের হাতে এই পুরষ্কার তুলে দেন। উপজেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত ৪৪তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং ৭ম জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড-২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত মেলায় বসে অতিথিবৃন্দ পাঁচ ক্ষুদে বিজ্ঞানীর হাতে ওই পুরষ্কার তুলে দেন।
পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা, আমেরিকান দুই বিজ্ঞানী রাজীব বিশ্বাস ও শান্তনু বিশ্বাসের মা শ্যামলী বিশ্বাস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. কামরুননেছা, উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা একাডেমীক সুপারভাইজার প্রদীপ ভৌমিক, সাহিত্যিক অসীম বিশ্বাস মিলন প্রমূখ।
চিতলমারী কালিদাস বড়াল স্মৃতি (ডিগ্রি) মহাবিদ্যালয়ের পাঁচ খুদে বিজ্ঞানী ফারদ্বীন খান, পৃথ্বিরাজ বিশ্বাস, রজত মন্ডল, সুদিপ্ত মন্ডল ও ইব্রাহিম মোল্লা জানান, তারা একটি সেমি স্মার্ট হাউস স্মার্ট ঘর বানিয়েছে যেখানে ওই আলোকরশ্মিও যন্ত্র স্থাপিত থাকবে। বাঘসহ যেকোনো বন্য প্রাণী শনাক্তকরণের জন্য এটা তারা উদ্ভাবন করেছে। রাতে বাড়িতে বাঘ এলেই যন্ত্রটি বেজে উঠবে শব্দ। ইনফ্রারেড আলোর রশ্মির মাধ্যমে তা শনাক্ত করা যাবে। আবার রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আলো ও শব্দ সৃষ্টি করে বাঘকে লোকালয় থেকে বনে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে।
পাঁচ ক্ষুদে বিজ্ঞানীর দলনেতা ফারদ্বীন খান জানান, এই উদ্ভাবনের জন্য একটি এলিডি আর সেন্সর, একটি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি, একটি বার্জার (শব্দ তৈরির জন্য), লেজার লাইট ও তিন ইঞ্চি ব্যাসার্ধের চারটি গোলীয় দর্পণ (কাচ) ব্যবহার করা হয়েছে। এসব উপাদান ব্যবহার করে লেজারের মাধ্যমে আলোকরশ্মি তৈরি করা যাবে।
বাড়িতে বন্য প্রাণী প্রবেশ করলে আলোকরশ্মির মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে। পরে অ্যালামের মাধ্যমে এক ধরনের শব্দ বাজতে থাকবে। অন্যদিকে বন্য প্রাণীকে ফিরিয়ে দিতে ঘরের মধ্যে সেন্সর দিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আলো ও শব্দ তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শব্দ তৈরি করতে একটি বার্জার, একটি রিসেট সেন্সর, একটি সাধারণ রিমোট কন্ট্রোল এবং চার ভোল্টের ব্যাটারির মাধ্যমে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আলো সৃষ্টি করা হয়েছে। এই উদ্ভাবনী প্রদর্শন করতে তাদের সর্বমোট ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৬০০ টাকা।