বাগেরহাটের চিতলমারীতে মোঃ বাকিয়ার শিকদার (২২) নামের নীরিহ এক ভ্যান চালককে জানালার গ্রীলে বেধে হাতুড়ি দিয়ে পিটানোর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাতে গ্রামবাসিরা আহত ভ্যান চালককে উদ্ধারের পর চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। আহত বাকিয়ার শিকদার উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাটরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রব শিকদারের ছেলে।
ঘটনার পর ওই এলাকার সাধারন মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা প্রভাবশালী ব্যক্তির ন্যাক্কারজনক এ ধরণের কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতনের শিকার বাকিয়ার শিকদারের বড় ভাই মোঃ মোক্তার শিকদার সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি বন্যায় আমাদের পাটরপাড়া গ্রামের সমস্ত মাছের ঘের ডুবে যায়। এরপর থেকে পাশাপাশি ঘের থাকার কারণে একই গ্রামের মৃত রুঙ্গু বিশ্বাসের ছেলে মোঃ মঞ্জুর বিশ্বাস অনৈতিক ভাবে আমাদের ঘেরের মাছ দাবি করে আসছেন।
এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে একটি সালিশী বৈঠক হয়। বৈঠকে মঞ্জুর বিশ্বাস লাঞ্চিত হন। সেই রাগে বুধবার রাতে আমার ছোট ভাই বাকিয়ারকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জানালার গ্রীলে বেধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নির্মম নির্যাতন করেন। এ খবর পেয়ে আমি ও গ্রামবাসিরা গুরুতর আহত অবস্থায় বাকিয়ারকে উদ্ধারের পর চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সে বর্তমানে হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের ১১ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নির্যাতনকারী এতই প্রভাবশালী যে থানায় অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছি।
বাকিয়ারের মা তাসলিমা বেগম কান্নাজড়িতকণ্ঠে বলেন, ওরা আমার ছেলেকে পশুর মত পিটিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। বাকিয়ারকে উদ্ধারকারী গ্রামবাসি মামুন তালুকদার, ফোরকান তালুকদার, নাজমুল মোল্লা ও তহিদুল তালুকদার বলেন, আমরা মারাত্মক আহত বাকিয়ারকে মঞ্জুর বিশ্বাসের ঘরের ফ্লোরে (মেঝেতে) পড়া অবস্থায় পেয়েছি। সেখান থেকে তাকে উদ্ধারের পর রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
এ ব্যাপারে মঞ্জুর বিশ্বাস গ্রীলে বাধা ও হাতুড়ি দিয়ে পিটানোর কথা অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, বন্যায় ঘেরে মাছ যাওয়া নিয়ে বাকিয়ারের সাথে আমার বিরোধ রয়েছে। তাই তাকে ডেকে নিয়ে বাড়িতে বসিয়ে রেখেছি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বাকিয়ারকে চিকিৎসা দেওয়া চিকিৎসক বলেন, আহতের শরীরে মারপিট ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।
তবে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক বলেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ আমি পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খুলনা গেজেট/ কেএম