খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন
  ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি মোকাম্মেল ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ
  সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া ২৩ বিচারপতি শপথ নিয়েছেন

চিতলমারীতে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে অবৈধ স-মিল

এস এস সাগর, চিতলমারী

বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রভাবশালীরা অবৈধ করাত কল (স-মিল) চালাচ্ছেন। খোদ উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় এগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও তাঁরা তা কর্ণপাত করছেন না। সরকারি নিয়ম না মেনে স্থানীয় বিত্তবানরা এ উপজেলার যত্রতত্র প্রায় অর্ধশত করাত কল গড়ে তুলেছেন।

পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র এবং লাইসেন্স ছাড়াই তাঁরা সরকারি স্কুল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সদর বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের আশেপাশে এ মিল গুলো স্থাপন করেছেন। ফলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। ঘটছে নানান দূর্ঘটনা। পাশাপাশি সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছেন।

গত ১৭ জানুয়ারী উপজেলা মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভার রেজুলেশনে জানা গেছে, কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা নিজেই অবৈধ করাত কল বন্ধের বিষয়টি সভায় উত্থাপন করেন। প্রয়োজনে এদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালানার কথাও উল্লেখ করেন। কিন্তু তারপরও অবৈধ করাত কলের প্রভাবশালী মালিকরা তাঁদের মিল বন্ধ করেনি। বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের কর্মযজ্ঞ।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় প্রায় অর্ধশত করাত কল রয়েছে। যার মধ্যে হাতেগোনা দু/চারটি মিলের বৈধ কাগজপত্র বা লাইসেন্স রয়েছে। করাত-কল (লাইসেন্স) বিধিমালা-২০১২ আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, কোন ব্যক্তি লাইসেন্স ব্যতীত করাত-কল স্থাপন বা পরিচালনা করতে পারবেন না।

স্কুল শিক্ষক মো. সাফায়েত হোসেন, খড়মখালী গ্রামের জাফর সরদার, ব্রহ্মগাতি গ্রামের পরিমল তরফদার, জিন্নাত আলী মীর, কুরমনির মিঠুন বিশ্বাস, সুরশাইলের মুন্না শেখ ও পাটরপাড়ার রুহুল আমিন বিশ্বাসসহ অনেকে জানান, উপজেলার ব্রহ্মগাতী, বাখরগঞ্জ বাজার, সদর বাজার, বাবুগঞ্জ বাজার, নালুয়া বাজার, শৈলদাহ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ করাত কল। কোনটি ভাঙা টিনের ঘরে, কোনটির আবার নেই ছাউনি। নেই কোন দূর্ঘটনা প্রতিরোধের ব্যবস্থাও।

অরক্ষিত পরিবেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠ শ্রমিকরা এসব মিলে কাজ করেন। এসব ‘স’ মিল মালিকদের নিকট থেকে গোপনে মাসোহারা নেওয়া হতে পারে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। যার কারণে অবৈধ জেনেও এদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়না।

এ ব্যাপারে ব্রহ্মগাতি গ্রামের একটি করাত কলের মালিক মো. ইসলাম শেখ বলেন, আমার করাত কলের কোন লাইসেন্স বা কাগজপত্র নেই। এ জন্য মাঝে মধ্যে লোকজন এসে টাকা নিয়ে যায়। কই কেউতো মিল বন্ধ করতে বলেনি।

চিতলমারী উপজেলা বন কর্মকর্তা অমল কৃষ্ণ বাইন বলেন, অবৈধ করাত কল থেকে বন বিভাগের লোকের টাকা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। এ উপজেলায় প্রায় অর্ধশত করাত কল রয়েছে। এরমধ্যে হাতেগোনা দু/চারটির বৈধ কাগজপত্র আছে।

বাগেরহাট জেলা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অবৈধভাবে মিল স্থাপন বা পরিচালনা করার কোন সুযোগ নেই। অবৈধ মিলের তালিকা প্রস্তুত করে বিদ্যুৎ বিভাগকে দিয়েছি এবং লাইন বিচ্ছিন্ন করার জন্য বলেছি। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়ে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কার্যক্ষেত্রে মামলা এবং জরিমান করা হচ্ছে। আমাদের এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা করেছি। তাঁরা (অবৈধ ‘স’ মিল মালিক) যদি দ্রুত সময়ে মধ্যে লাইসেন্স গ্রহণ না করে তাহলে তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মিল বন্ধ করে দেওয়া হবে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!