খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ পৌষ, ১৪৩১ | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্তি না হলে ঈদের পর অভিভাবকদের কর্মসূচি

চিতলমারীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতীর অভিযোগ

চিতলমারী প্রতিনিধি

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতর্কিত পরিচালনা কমিটিকে কেন্দ্র করে অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা ফুঁসে উঠেছেন। তারা অনিয়ম-দুর্নীতি ও ভোট জালিয়াতীর অভিযোগ তুলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি মিস্ত্রীর বিরুদ্ধে ৮ টি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিতর্কিত ওই কমিটি বিলুপ্তি করে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি না দিলে অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা ঈদের পর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় দুই পক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (১৪ জুন) বেলা ১১ টায় বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মৈয়ার মোল্লা, আল বাচ্চু শেখ, খসরু আলম, সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালাম, সাবে স্টাফ সিদ্দিকুর রহমান ও হিজলা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য দেবাশিষ বিশ্বাসসহ অনেকে বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি মিস্ত্রি দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম করে আসছেন। তিনি সম্প্রতি গোপনে ভোট জালিয়াতী করেছেন। কোন নির্বাচন না দিয়েই ভূয়া নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছেন। অথচ আমরা কোন অভিভাবক ভোটের ব্যাপারে কিছুই জানি না এবং কোন ভোট দেই নেই। এখন শুনতে পাচ্ছি ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি গাজী আবজাল হোসেনের মেয়ে বনলতা গাজী (২৪) কে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি করে একটি কমিটি জমা দিয়েছে। এর আগে ওই প্রধান শিক্ষক গাজী আবজাল হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে অবৈধ অর্থ বাণিজ্যর মাধ্যমে এডহক কমিটির সভাপতি বানিয়েছিল। এখন তার মেয়েকে সভাপতি বানানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত ছাড়া এভাবে যদি বনলতা গাজীকে সভাপতি বানানো হয় তাহলে এলাকায় চরম অশান্তি ও সংঘর্ষের মত ঘটনা ঘটতে পারে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ একেবারে নষ্ট হবে। তাই এলাকার শান্তি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষার জন্য অবৈধ কমিটি বাতিল পূর্বক সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যেমে নতুন কমিটি গঠন এবং অনিয়ম ও দুর্নিতীগ্রস্থ প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি মিস্ত্রি’র বিচারের দাবিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড খুলনা অঞ্চলের উপ পরিচালক, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, চিতলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চিতলমারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। অবৈধ ভাবে তৈরিকৃত ওই বির্তকিত ওই কমিটি বিলুপ্তি করে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি না করা হলে ঈদের পর আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করব।’

এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি গাজী আবজাল হোসেন বলেন, ‘আমি ওই স্কুলের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে অভিভাবক সদস্য। বিদ্যালয়ে বিধিমোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোন প্রকার অনিয়ম হয়নি। তারা হেড মাষ্টারের বিরুদ্ধে অযথা অভিযোগ করেছে।’

বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি মিস্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রিজাইডিং অফিসারের নির্দেশ মত নির্বাচন পরিচালনা করেছি। নির্বাচন নিয়ে যদি কারচুপি হয়ে থাকে সেটা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানেন।’

চিতলমারী উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার প্রদীপ ভৌমিক বলেন, ‘আসলে অভিযোগ করার অধিকার সকলের আছে। আমি মনে করি এই অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করার পর আমি বিধিমোতাবেক নির্বাচন করেছি। প্রতি পদে একক প্রার্থী থাকায় ভোট গ্রহণ হয়নি। নতুন সদস্যদের প্রস্তাবে বনলতা গাজীকে সভাপতি করে একটি কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে’।

চিতলমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. কামরুন্নেছা বলেন, ‘বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে একাডেমিক সুপার ভাইজারকে নিয়োগ দিয়েছে। এটা একদম গোপনীয়ভাবে হয়েছে। এটার ব্যাপারে আমি কিচ্ছু জানিনা।’

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!