বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ দেশী প্রজাতির মাছ রক্ষায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষে তাঁরা হাটে-বাজারে, মাঠে-ঘাটে, নদী-খালে ও বিলে কাজ করে যাচ্ছেন। অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছেন বিপুল পরিমাণ চরপাটা, ঝাল, ম্যাজিক জাল, ইলিশ জাল, নেট জাল ভেষাল ও কারেন্ট জাল। তাঁদের এ কর্মকান্ডে শুধু দেশী প্রজাতির মাছ রক্ষা নয়, নদী ও খালের পানি প্রবাহও রক্ষা পাবে। সোমবার দুপুরে এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয় অভিজ্ঞজনেরা।
উপজেলা মৎস্য দপ্তর থেকে জানা গেছে, এ উপজেলায় মধুমতি, বলেশ্বর ও চিত্রা নদীসহ ৫৫ টি খাল এবং মাছুয়ারকুল, শকুনিয়া, রুইয়ারকুল, খাগড়াবুনিয়া ও বারাশিয়ার বিল রয়েছে। তিনটি নদীর আয়াতন ৩ হাজার ১৮৬ একর, ৫০ টি খালের আয়াতন ১ হাজার ২৮৭ একর ও চারটি বিলের আয়াতন ৩৪৬ একর। এখানে ৭ হাজার ৫০০ জন মৎস্য চাষি ও ২ হাজার ২ জন মৎস্যজীবি এবং ২টি মৎস্য গ্রাম রয়েছে।
এসব জলাশয়ে শিং, মাগুর, শোল, টাকি, পুঁটি, স্বরপুঁটি, বাইম, রয়না, টেংরা, পটকা (টেপা), চিংড়ি, খলিশা, চান্দা, চেলা, চুচড়া, কৈ ও গজারসহ কমপক্ষে ৫০ প্রজাতির দেশী মাছ হয়।
এক শ্রেণীর মানুষ মাছ শিকারের নামে এসব দেশী মাছের বংশ বিস্তার রোধ ও ধংস করছে। তারা মাছ শিকারের জন্য সরকার নিষিদ্ধ চরপাটা, ঝাল, ম্যাজিক জাল, ইলিশ জাল, নেট জাল ভেষাল ও কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবলম্বন করেন। তাঁদের নানা শিকারী কৌশল থেকে দেশী প্রজাতির মাছ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ সচেনতামূলক কর্মশালা, প্রচার-প্রচারণা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানসহ নানা উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
চিতলমারী উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম ও ক্ষেত্র সহকারি পলাশ হালদার বলেন, দেশী প্রজাতির মাছ রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার ও আমারা মিলে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছি। ইতোমধ্যে আমরা ১৮ টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। অভিযানে জরিমানা করা হয়েছে ৩১ হাজার টাকা। এছাড়া ৬ লাখ টাকা মূল্যের কারেন্ট জাল, ২৫০টি চরপাটা, ১০০টি ঝাল, ২৫টি ম্যাজিক জাল, ৩টি ইলিশ জাল, ২০টি নেট জাল, ৩৫টি ভেষাল জাল ও নানা প্রকার মাছ শিকারের সরামঞ্জাদি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত এসব মালামাল আগুনে পোড়ানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, দেশী প্রজাতির মাছ রক্ষায় অভিযান চলছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সেই সাথে দেশী মাছ রক্ষায় সকলকে আন্তরিক হতে হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম