বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরলাটিমা গ্রামের কৃষক সঞ্জয় বিশ্বাস এখন তার বাপ-দাদার ক্রয়কৃত জমির দলিল না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ওই জমিতে তিনি বসবাস করে আসছেন। জমির মালিক তাদের দলিল দেওয়ার কথা বলে চরম প্রতারণা করেছেন। অবশেষে তাদের দলিল না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ায় সঞ্জয় বিশ্বাস ও তার পরিবার চরম হুমকির মধ্যে রয়েছেন।
ভুক্তভোগী সঞ্জয় বিশ্বাস স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তার ঠাকুরদা অবনী মোহন বিশ্বাস ১৯৭১ সালের আগে প্রতিবেশি কৃষ্ণদাস বিশ্বাসের কাছ থেকে হিজলা মৌজার বিআরএস ৯১৪ খতিয়ানের ২৫১৮ দাগের ২৬ শতক জমি ক্রয় করেন। জমির সম্পূর্ণ টাকা তখন পরিশোধ করা হলেও নানা কারণে জমির দলিল হয়নি। পরবর্তীতে দলিল না দিয়েই কৃষ্ণ দাস বিশ্বাস মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে অবনী মোহন বিশ্বাসও মারা যান। এ অবস্থায় ওই জমিতে অবনী মোহন বিশ্বাসের উত্তরসূরী সঞ্জয় বিশ্বাস সেখানে ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিনি সেখানে বসবাস করছেন।
এ অবস্থায় কৃষ্ণদাস বিশ্বাসের ছেলেদের কাছে সঞ্জয় বিশ্বাস তার ঠাকুরদার ক্রয়কৃত জমির দলিল চাইলে নানা তালবাহানা শুরু করেন। সঞ্জয় বিশ্বাসকে ওই জমির দলিল না দিয়ে অধিক টাকার লোভে মৃত কৃষ্ণদাস বিশ্বাসের দুই ছেলে হরিপদ ও গুরুপদ বিশ্বাস ওই জমি কিছুদিন আগে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ায় অবনী মোহন বিশ্বাসের উত্তরসূরি সঞ্জয় বিশ্বাস চরম বিপাকে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী পরিবারটি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে চরলাটিমা গ্রামের প্রবীণ অজিত মন্ডল, বাসুদেব বালা, বিমল মন্ডলসহ অনেকে জানান, কৃষ্ণদাস বিশ্বাসের কাছ থেকে অবনী মোহন বিশ্বাস ওই জমি ৭১ সালের আগে ক্রয় করেন। তাদের দুই পরিবারের মধ্যে ভালো সম্পর্কের কারণে দলিলের বিষয়টি তখন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এছাড়া তখন দেশে যুদ্ধ চলছিল। যে কারণে তখন দলিল না দিয়েই কৃষ্ণ দাস মারা যান। বিষয়টি তারা অবহিত আছেন। এখন ওই জমি মৃত কৃষ্ণ দাসের ছেলেরা অন্যত্র বিক্রি করে দিয়ে সঞ্জয় বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা করেছে। এটি চরম বিশ্বাসঘাতকতা বলেও মন্তব্য করেন তারা।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য বাসুদেব বালা জানান, সঞ্জয় বিশ্বাসের সাথে এটা চরম প্রতারণা করা হয়েছে। তাদের জানামতে বাপ-দাদার ক্রয় সূত্রে ওই জমিতে সঞ্জয় বিশ্বাস বাড়ি ঘর তৈরি করে গত ৪০ বছর ধরে বসবাস করছে। বিষয়টি গ্রামের অধিকাংশ লোক জানেন। এটা নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। এর একটা বিহীত হওয়া দরকার বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে মৃত কৃষ্ণদাস বিশ্বাসের ছেলে গুরুপদ বিশ্বাস অবনি মোহন বিশ্বাসের কাছে জমি বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, তার বাপ ওই জমি বিক্রি করেছেন কিনা তাদের সেটি জানা নেই। তবে সঞ্জয় বিশ্বাস ওই জমিতে কোন স্বত্ত্বে ৪০ বছর ধরে বসবাস করেছেন সে প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম