খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত
  জুলাই গণহত্যা : ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
পৌরসভা নির্বাচন

চালনায় শেষ মুহূর্তে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার চালনা পৌরসভা নির্বাচনের বাকি আর দুদিন। প্রচারণাও তুঙ্গে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শেষ মুহূর্তের প্রচারণায়। কর্মী-সমর্থকেরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোটারদের মন জয় করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট কেমন হবে, কারচুপি হবে কিনা, সব ভোটাররা নিজেদের ভোট দিতে পারবেন কি না এসব নিয়ে ভোটাররাও এখন ব্যস্ত চুলচেরা বিশ্লেষণে।

ভোটারদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, চালনা পৌরসভায় এবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মধ্যে মূল লড়াই হবে। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় এবার নারীরাও বেশ সরব। পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নারীরা দল বেঁধে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীদের স্ত্রীরাও মাঠে নেমেছেন।

চালনার একজন কলেজ শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা গেজেটকে জানান, ‘এবার প্রার্থীরা ব্যাপক খরচ করছেন। কোনো প্রার্থীর মিটিংয়ে উপস্থিত হলে টাকা, প্রচারণায় গেলে টাকা পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে নারীরা সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন। অনেক নারী দিনে দুই শিফটে প্রচারণায় যাচ্ছেন। নির্বাচন যেমনই হোক নিম্ন আয়ের এই জনপদে অনেকে এবারের নির্বাচনে নানা পন্থায় টাকা কামানোর সুযোগ পেয়েছেন।’

এদিকে হেভিওয়েট তিন মেয়র প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা ভালো চললেও বিএনপি প্রার্থীর পক্ষের লোকজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রচারে পরোক্ষ বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তবে তারা কোথাও লিখিত অভিযোগ দেননি।

নির্বাচনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং সাবেক মেয়র অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের কর্মীদের নানাভাবে হেনস্থা করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাতে কোথাও আমার কর্মীদের দেখলে ভয়ভীতি দেখানো, অবান্তর প্রশ্ন করা, আটকে রাখার মতো ঘটনা ঘটছে। রাস্তাঘাটে তাঁরা পাহারা বসিয়েছে। আবার ভোট যেখানেই দেওয়া হোক অটো নৌকা প্রতীকে যোগ হবে এমন অপপ্রচারও চালাচ্ছে। আমি সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা করছি। তবে তাঁদের আচরণ তেমনটা না।’ লিখিত অভিযোগ করেছেন কি না জানতে চাইলে আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোথায় অভিযোগ দেব, বলেন?’

বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল খয়ের খাঁন অসুস্থ থাকায় প্রথম থেকেই খুলনা নগরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট মোজাফফর হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা যাতে মাঠে না থাকে সে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে না এমন ভয় দেখাচ্ছে। তবে আমরা ভোটারদের দুয়ারে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি, ভোট চাচ্ছি। অন্য দুই প্রার্থী মাঠে ব্যাপক টাকা ছড়াচ্ছে।’ লিখিত অভিযোগ করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। পুলিশ প্রটোকলে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদাসম্পন্ন আওয়ামী লীগ নেতা, সংরক্ষিত নারী সাংসদ সবাই এখানে মিটিং করছেন। প্রশাসন সবই তো দেখছে। তা কি অভিযোগ দেব।’

এসব বিষয়ে বর্তমান মেয়র এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী সনত কুমার বিশ্বাস বলেন, আমার টাকা নেই, তা কিভাবে টাকা ছড়াব। যার টাকা আছে (অচিন্ত্য) সে ছড়াচ্ছে। তাঁর প্রচার-প্রচারণয়ায় কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। যেহেতু সে টাকা ছড়ায়, তাই সব সময় নানা শঙ্কায় থাকেন। আর বিএনপি স্থানীয় থেকে জাতীয় নির্বাচনে সব দিন মনগড়া কিছু অভিযোগ করে। মূলত মাঠ গরম করার জন্য এসব কথা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘আমার লোকদের তো তাঁরা রাতে রাস্তায়ই বের হতে দেয় না। আমার কোনো ব্যাংকে টাকাই নেই, দেব কি করে। টাকা ছড়ানোর এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে সেই (সনত) টাকা ছড়াচ্ছে। এখন পর্যন্ত তাঁরা কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। তাঁরা এবং তাঁদের লোকজন রাত দুইটা পর্যন্ত রাস্তায় থাকে এবং মানুষকে টাকা দেয়।’

 

খুলনা গেজেট / এআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!