খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  নিখোঁজের ৪২ ঘণ্টা পর কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
  ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক আটক
  সচিবালয়ের আগুন সোয়া ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস

চলতি মাসেই তাপমাত্রা এক অংকের ঘরে নেমে আসবে

গেজেট ডেস্ক

ফজরের নামাজ পড়ে অটোভ্যান নিয়ে শহরে আসেন মীরগড় গ্রামের নুরুল্লাহ। সকাল সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত কোন ভাড়া মারতে পারেননি । হঠাৎ করেই আজ বেড়ে গেছে কুয়াশা সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া। বিপর্যস্থ এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হতাশ তিনি। কারণ আর একদিন পর ঋণের কিস্তির টাকা জোগাড় করতে আরও ১৩শ’ টাকা দরকার।

একই রকম সমস্যা ফুলতলা গ্রামের আকবর আলী, শরিফুল আলম এবং মিজানুর রহমানের। ভোর থেকেই শহরের সিনেমা রোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কাজের সন্ধান করছে তারা। ডিসেম্বর মাস থেকে শীত কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় কাজ কর্ম একেবারেই কমে গেছে । আগে নদীর পাথর তুলে সংসার চালালেও ঠান্ডা পানিতে পাথর সংগ্রহ করা কঠিন হযে পড়ায় অন্য কাজের সন্ধান করছে তারা।

বিরুপ আবহাওয়ার কারণে এভাবেই সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকায় টান পড়েছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা উঠানামা করছে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির ঘরে। বিকেল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ঠান্ডা বাতাস, সন্ধ্যা থেকে সকাল জুড়ে ভারি শিশির কণা জেলার শীত কবলিত মানুষের জীবন যাত্রার পরির্বতন এনেছে। দিনভর সূর্যের আলো থাকলেও তেমন তেজ নেই রোদের। রয়েছে খন্ড খন্ড মেঘের মেলা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে হালকা বৃষ্টি পাতের আভাস রয়েছে। ডিসেম্বরে তাপমাত্রা এক অংকের ঘরে নেমে যাবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস রয়েছে।

অব্যাহতভাবে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা কমতে থাকায় শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। পাহাড় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল ঠান্ডা বাতাস আর ভারি কুয়াশার কারণে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা দুই সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রিতে বিরাজ করলেও আজ শুক্রবার বেড়েছে ঘন কুয়াশাসহ বাতাশ। অব্যাহতভাবে রাতে তাপমাত্রা কমতে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। দিনের তাপমাত্রাও থাকছে ২৮/ ২৯ ডিগ্রির ঘরে। সন্ধ্যা নামলেই হিমেল হাওয়ায় বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গ্রামের হাটবাজারগুলোতে সন্ধার পর লোক সমাগম কমে যাচ্ছে। শহরের মানুষরাও তাড়াতাড়ি ঘরমুখী হচ্ছে। তবে পাড়া মহল্লা এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে শীতের নানা রকমারি পিঠা পুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যাবেক্ষণাগার।

সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের সূর্য উঠলেও কুয়াশা ঝরা প্রকৃতি। সবুজ ঘাসের ডগায় টলমল করছে ভোরের শুভ্র শিশির। বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে শিশির কণা। শিশির মাড়িয়ে কাজে যেতে দেখা যায় চাষিদের। শীত ঘিরে বাংলার ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের আয়োজন।

স্থানীয়রা জানায়, ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সন্ধ্যার পর থেকেই উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের পরশ অনুভূত হচ্ছে। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত গায়ে ভারি কাঁথা নিতে হচ্ছে। উত্তরের এ জেলাটি বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় অন্যান্য জেলার আগেই এ অঞ্চলে শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে নভেম্বর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। শীতকে কেন্দ্র পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে তেঁতুলিয়ায়। এ সময় আকাশ কিছুটা পরিষ্কার থাকায় দেখা মিলে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার বর্ণালী লাবণ্য।

জেলা প্রশাসক মো. সাবেদ আলী জানান, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সকল মানুষের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। শীত মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫টি উপজেলায় ২ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত বরাদ্দসহ খাদ্য সহায়তা চেয়ে মন্ত্রনালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!