খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ পৌষ, ১৪৩১ | ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকারে বাসের ধাক্কা, নিহত ৫, আহত ১০
  মাদারীপুরের কালকিনিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ চলছে, ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

চড়েছে পেঁয়াজের দাম, অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে আমদানি হওয়ার পরও বৃদ্ধি পেল পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশি দরে বিক্রি হওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা প্রাকৃতিক দূর্যোগকে দায়ি করছেন। অপরদিকে সরকার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও পূর্বের দামে ডিম বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। ডিমের সংকট থাকায় এ দরে বিক্রি করছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

খুলনার কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ গত এক সপ্তাহ আগে একই পণ্য খুলনার বাজার গুলোতে ১২০ টাকা ও ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সোনাডাঙ্গা পাইকারী বাজারের আড়ত মালিক আ: মালেক খুলনা গেজেটকে বলেন, ভারতের কেন্দ্রিয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পেট্রোপোল বন্দর পরিদর্শনে আসবেন। এ জন্য এ বন্দর দিয়ে সকল পণ্য আমদানি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তাই দেশি পেঁয়াজ তিনি ১২০ ও এলসি করা পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

একই বাজারের অপর ব্যবসায়ী মুসা খুলনা গেজেটকে বলেন, শৈলকূপা, ঝিনাইদাহ, লাঙ্গলকোট, বান্টি, কুষ্টিয়া, চৌরঙ্গী ও শশ্মানঘাটসহ বিভিন্ন হাট থেকে এখানে প্রতিদিন ১০ ট্রাকের বেশি পেঁয়াজ আসে। কিন্তু গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ওইসব এলাকার হাট গুলোতে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেওয়ায় পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে। সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ সকল হাট গুলো নিয়ন্ত্রণ করেন ওইসব এলাকার চাষীরা। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ক্রমাগতভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকবে। ওই সকল হাট গুলোর মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

একই বাজারের পাইকারী বিক্রেতা রস্তুম তালুকদার বলেন, দেশের বিভিন্ন বাজার থেকে এ বাজারে ট্রাক ভাড়া ও লেবার বাবদ প্রতি কেজি পেঁয়াজ আনতে আমাদের ৩ টাকা খরচ পড়ে। আমরা এখানে কমিশন ভিত্তিক ব্যবসায় করি। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করলে ব্যাপারীরা আমাদের ২ টাকা কমিশন দেয়। আমাদের তেমন লাভ হয় না। উৎপাদিত এলাকার চাষীরা বেশ লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির জন্য বাজারে পেঁয়াজের আমদানি আরও ২ মাস পিছিয়ে গেল। সারাবছর পেঁয়াজের মূল্য উর্ধ্বগতির কারণ জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে কোন উত্তর দিতে পারেনি।

অপরদিকে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক হাত বদলের পালায় দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

জানতে চাইলে ব্যবসায়ী আরাফাত খুলনা গেজেটকে বলেন, পাইকারী বাজারে দাম বেড়েছে তাই আমাকে এ দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ দরে বিক্রি করতে না পারলে তার সংসার চলবে না বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।

সোনাডাঙ্গা পাইকারী বাজারে কথা হয় ইসরাফিল মোল্লার সাথে। তিনি নগরীর গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা। খুলনার একটি ঠিকাদারী ফার্মে তিনি কর্মরত আছেন। তিনি খুলনা গেজেটকে জানান, দিন দিন নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেভাবে তার বেতন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। যে বেতন পান তা দিয়ে জীবন চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে। পেঁয়াজের দাম ১৩০ টাকা আর লাউয়ের দাম ৫০ টাকা।

তিনি আরও বলেন, যা আয় করি তা দিয়ে সংসার চলে না। তার ওপর রয়েছে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া। কিভাবে চলব তা ভেবে অস্থির হয়ে পড়েছে জীবন।

এদিকে সরকারের আমদানির ঘোষণায় কোন প্রভাব পড়েনি ডিমের ওপর। ব্যবসায়ীরা পূর্বের দামে বিক্রি করছেন ডিম। প্রতি হালি ডিম মানভেদে ৫২ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি করছেন।

ডিমের দাম না কমায় ক্ষোভ ঝাড়লেন ক্রেতা মুহাসিন আলী। তিনি খুলনা গেজেটকে বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যবসা করছেন। আওয়াজ দিয়েও ডিম আমদানির ঘোষণা করে দাম কমাতে পারল না। তিনি বাজার মনিটরিং করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!