বঙ্গোপসাগরে উদ্ভূত নিম্নচাপ হতে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা আগামী ১৩, ১৪ বা ১৫ মে এর মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কোন দূর্যোগ এলেই সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। ফলে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ এই তিনটি উপজেলায় ইউএনওদের আশ্রয়কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পূর্ব মূহুর্ত্বে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে উপকূলীয় নদ-নদীতে নৌকা, ট্রলারসহ অন্যান্য যানবাহন প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আসার জন্য আগে থেকেই করা হবে মাইকিং। বার্তা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ গুলোর জনপ্রতিনিধিদেরকে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদেরও।
ঘূর্ণিঝড় মোচা মোকাবেলায় সোমবার (৮ মে) দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় এ তথ্য জানানো হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এর সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা রশিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আসাদুজ্জামন বাবু, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার হোসেন, এ বি এম খালিদ সিদ্দিকী, রহিমা খাতুন, ফাতেমা তুজ জোহরা, জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল বাসেত প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, এখনো কোন দূর্যোগের পূর্বাভাস আমরা পাইনি। তবে সাতক্ষীরা একটি দুর্যোগ প্রবণ জেলা। যে কোন দূর্যোগ এলেই সাতক্ষীরা উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। সেজন্য সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। জেলার উপকূলীয় শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ তিনটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও পাকা স্থাপনা স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ এগুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে উপকূলীয় নদীতে নৌকা, ট্রলার রেডি রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দূর্যোগকালীন সময়ে যেটা হয়, মানুষ সাধারনতঃ ঘর ছেড়ে বাইরে আসতে চায় না। আমি আহ্বান রাখবো, দূর্যোগের সময় যদি প্রয়োজন হয় আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আসবেন। থাকা-খাওয়াসহ সার্বিক ব্যবস্থা সরকার করবে।
সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সাতক্ষীরা জেলার দুর্যোগের সম্ভাব্য প্রভাব এবং দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসকল্পে করণীয় সম্পর্কে বক্তারা পৃথকভাবে তাদের মতামত প্রদান করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম