ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে পুরো বাগেরহাট জেলা। ঝড়ের ৭ দিন পরে রোববার (২ জুন) জেলার বিভিন্ন খাতের ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে এই ঝড়ে ২৭টি খাতে ৬৪৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সময় গাছ পড়ে মারা গেছেন এক নারী এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৭ জন।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির উল্লেখযোগ্য খাতগুলো হচ্ছে, কৃষি, মৎস্য, বিদ্যুৎ, সড়ক, পানি, বন, নৌকা-জাল ও ট্রলার। এবারের ঝড়ে ৪ হাজার ৩৪৫ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে, যা টাকার অংকে ৭৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ৩৫ হাজার মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চাষিদের ক্ষতি হয়েছে ৭২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ১ হাজার ৭২১ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পল্লী বিদ্যুতের ৫৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ৭৬১ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে থাকা ৫৩টি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা টাকার অংকে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ৪৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ১০৫ হেক্টর বনভূমি নষ্ট হয়ে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং ১২ হেক্টর নার্সারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৯ হাজার ১২৭টি পুকুর জলাশয়সহ সুপেয় পানির বিভিন্ন উৎস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ৬ শতাধিক নৌকা-ট্রলার এবং ৫৭২টি জাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে জেলে ও নৌকার মালিকদের ২ কোটি ৪১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এর বাইরে ৬৮ হাজার ৪১৯টি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার ১২৪টি ঘর সম্পূর্ণ ও ৫৫ হাজার ২৯৫টি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করেছি। বিভিন্ন দপ্তর থেকে আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। বাগেরহাটে ২৭টি খাতে ৬শ ৪৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কিছু সহযোগিতা করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ও অনুমোদন সাপেক্ষে আরও মানুষকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এএজে