পুরো শক্তি নিয়ে উপকূলীয় এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ে ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট তছনছ হয়েছে, ভেঙে পড়েছে গাছ-পালা। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে দুইজন নারী ও আটজন পুরুষ।
সোমবার (২৭ মে) মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করার সময় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তারা হলেন, খুলনার লালচাঁদ মোড়ল, বরিশালের জালাল সিকদার, মো. মোকলেছ, লোকমান হোসেন, সাতক্ষীরার শওকত মোড়ল, পটুয়াখালীর মো. শহীদ, ভোলার জাহাঙ্গীর, মাইশা, মনেজা খাতুন ও চট্টগ্রামের ছাইফুল ইসলাম হৃদয়।
মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তালিকায় তাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বসতঘরের ওপরে গাছ পড়ে, বাজারে যাওয়ার সময় গাছ পড়ে, জলোচ্ছ্বাসে সৃষ্ট পানিতে ডুবে, দেয়াল ভেঙে এবং নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে তাদের মৃত্যু হয়েছে। আর একজন সাইক্লোন সেন্টারে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।
এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোববার (২৬ মে) বিকেল ও সন্ধ্যা থেকে বাগেরহাট, ভোলা, পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এতে মুঠোফোনের চার্জ হারিয়ে অনেকে হয়ে পড়েছেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বরিশাল, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও সাতক্ষীরায় একজন করে এবং ভোলায় শিশুসহ দুজন ও পটুয়াখালীতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রবল ঝড়বৃষ্টির সময় বাড়ির বাইরে থাকা ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে মারা যান তিনি।
এদিকে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শেষ করেছে। আর দুই ঘণ্টার মধ্যেই এটি প্রবল থেকে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়টির পুরো প্রভাব শেষ হতে আরও পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি রোববার (২৬ মে) রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করে। এরপর উপকূল থেকে শুরু করে সারাদেশে বৃষ্টি শুরু হয়।
সোমবার (২৭ মে) সকাল ৮টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে।
খুলনা গেজেট/এমএম/এএজে