ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় খুলনা বিভাগী স্পেশাল জজ আদালতের হিসাব সহকারী ও কাম ক্যাশিয়ার অলোক কুমার নন্দীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার খুলনা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো: আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময়ে আসামি অলোক কুমার নন্দী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো: ইয়াসিন আলী।
আদালতের সূত্র জানায়, খুলনা বিভাগীয় জজ আদালতে মো: জহুর ই আলমের বিরুদ্ধে স্পেশাল মামলা ৪০/৯১ নং মামলা বিচারাধীন ছিল। মামলার আসামির স্ত্রী হাসিনা আলম খোজ খবর নিতে আদালতে আসেন। তখন ওই আদালতের হিসাব সহকারী ও কাম ক্যাশিয়ার অলোক কুমার নন্দী আসামি জহুর ই আলমকে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে খালাস করিয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করেন।
১৯৯৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অলোক কুমার নন্দীকে দেড় লাখ টাকা সিএন্ডবি কলোনীর সামনে প্রদান করা হবে বলে হাসিনা আলম আশ্বাস দেন। কিন্তু ওইদিন তিনি কোন টাকা তাকে পরিশোধ এবং তার সাথে দেখাও করেননি। পরে একই বছরের ১৪ মে অলোক কুমার নন্দী মাগুরায় হাসিনা আলমের বাড়িতে যান এবং প্রতারণার আশ্রায় নেয়। এরপর জানানো হয় দেড় লাখ টাকা না দেওয়ায় আদালতের বিচারক আসামি জহুর ই আলমকে বিচারে সাজা প্রদান করেছেন। হাসিনা আলম তখন নন্দীকে জিজ্ঞাসা করেন করনীয় কি আছে। উত্তরে নন্দী জানান দেড় লাখ টাকা প্রদান করিলে মামলার যাবতীয় নথি পুড়িয়ে দেবেন।
১৯৯৪ সালের ২৫ মে আসামির স্ত্রী হাসিনা আলম ৬ শতক জমি ও গরু বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা যোগাড় করে দু’জনের উপস্থিতে নন্দী উক্ত টাকা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে জহুর ই আলমের বিরুদ্ধে আদালতের রায়ের সাজা সংক্রান্ত চিঠি পেয়ে আদালতে আত্মসর্ম্পন করলে তাকে কারগারে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে জহুর ই আলমের স্ত্রী হাসিনা আলম অলোক কুমার নন্দীর কাছে টাকা ফেরত চান। অলোক কুমার নন্দী বিভিন্ন সময়ে হাসিনা আলমকে ২৩ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং আর কোন টাকা দিতে পারবেন না বলে তাকে জানানো হয়।
এ ঘটনায় হাসিনা আলম খুলনা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে ১৯৯৯ সালের ১৭ জুন একটি নালিশী দরখাস্ত করেন। যাহা বিভাগীয় জজ আদালত হতে একই বছরের ২২ জুন একটি স্মারক খুলনা দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে প্রেরণ করেন। ২০০০ সালের ৩০ মে যাবতীয় প্রমাণাদি গ্রহণ শেষে জেলা দুর্নীতি দমন ব্যুরো পরিদর্শক মিছবাহ উদ্দিন বাদী হয়ে খুলনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার নং ৩০। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন জেলা দুর্নীতি দমন ব্যুরোর পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র দত্ত।
খুলনা গেজেট/সাগর/এমএম