উপজেলা কমিটি নিয়ে খুলনা জেলা বিএনপিতে বিরোধ এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। উপজেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে দুই পক্ষ সংবাদ সম্মেলন, পদ স্থগিতসহ নানা কান্ড ঘটাচ্ছেন। পাল্টাপাল্টি মিছিল, সমাবেশ চলছে। নেপথ্যে থেকে এসব কর্মকান্ডে মদদ দিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলালের অনুসারীরা।
বিএনপি নেতারা জানান, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মাসে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আমির এজাজ খান আহ্বায়ক এবং মনিরুল হাসান বাপ্পীকে সদস্য সচিব করা হয়। এই কমিটি গঠনের পর থেকে জেলা বিএনপির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলালের কাছে। জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সব অঙ্গ সংগঠনের নেতারাই হেলালের অনুসারী। দীর্ঘদিন ধরে তারা ঐক্যবদ্ধ থাকলেও উপজেলা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে হেলালের অনুসারীরা দুটি ভাগে ভাগ হয়ে পড়েছে। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ঘায়েল করতে সংবাদ সম্মেলন, পদ স্থগিতসহ নানা কান্ড ঘটাচ্ছেন।
জানা গেছে, গত ২৪ এপ্রিল জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান ও সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পীর যৌথ স্বাক্ষরে ৫টি উপজেলা ও ২টি পৌরসভায় পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন ও ঘোষণা করা হয়। এর দুই দিন পর থেকে কমিটি নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে বিদ্রোহ শুরু হয়। কমিটি বাতিলের দাবিতে ২৬ এপ্রিল পাইকগাছা ও চালনা পৌরসভা, ২৭ এপ্রিল ডুমুরিয়া, ২৮ এপ্রিল কয়রা এবং বটিয়াঘাটার নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানান। একই দিনে ডুমুরিয়া ও কয়রার নেতাদের পদ স্থগিত করা হয়।
সূত্রটি জানায়, জেলা বিএনপির বিরোধে একাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন বাবু, সিনিয়র নেতা জুলফিকার আলী জুলু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েত। অন্যদিকে বর্তমান কমিটির পক্ষে সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীসহ অন্যরা। দুই পক্ষই আজিজুল বারী হেলালের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ক্ষমতার দ্বন্দে একে অন্যকে ঘায়েল করতে ব্যস্ত রয়েছেন।
খুলনা জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন বাবু বলেন, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফা কমিটি ঘোষণা করেছে। সেখানে উপজেলা পর্যায়ে অনেক নেতা বাদ পড়েছেন। তৃণমূল পর্যায়ে এই অচলাবস্থা কাটাতে শিগগিরই তারা সভা ডাকবেন। কেন্দ্রীয় নেতার রকিবুল ইসলাম বকুল ও আজিজুল বারী হেলালের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন।
অন্যদিকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে ত্যাগী নেতাদের দিয়ে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএনপির কয়েকজন নেতা দলের মধ্যে বিভেদ বাড়াতে উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের খুলনায় ডেকে এনে সংবাদ সম্মেলন করাচ্ছেন। তাদের অসাংগঠনিক কাজে দলের বিভেদ বাড়ছে।
নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান বর্তমানে খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছে। তাদের মুক্তির আগে বিরোধ সম্ভাবনা কম।
খুলনা গেজেট/এইচ এইচ