গাভী পালন করে বেকারত্বকে হার মানিয়েছেন নড়াইলের বাসুদেব লস্কর। বেকারত্ব আর সংসারের অভাব দূর করতে প্রথমে স্বল্পপরিসরে গাভী পালন শুরু করলেও অক্লান্ত পরিশ্রম আর সাহসের জোরে এখন তা খামারে রূপ নিয়েছে। তাঁর গাভী পালনের সাফল্য দেখে এলাকার অনেকে ঝুঁকেছেন গাভীর খামারের দিকে। তাঁর খামারের নাম ইতিকা ডেইরি খামার।
নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের মোস্তরহাট এলাকার ঠাকুর লস্করের ছেলে বাসুদেব লস্কর। ৩৮ বছরের লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে পৈতৃক জমিতে ঘর তৈরি করে গাভী পালনের সিদ্ধান্ত নেন।২০২১ সালে দেশি একটি গাভী দিয়েই খামারের কাজ শুরু করেন তিনি।
বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ক্রয় করেন গাভী। কয়েক বছরের ব্যবধানে তার খামারে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৩০টি গরু রয়েছে।
উন্নত জাতের এই ফ্রিজিয়ান ৩০ টি গাভীতে তার খামার পরিপূর্ণ হয়ে আছে। ৩০ টি গাভীর ভিতর ১০ টি গাভী দুধ দিচ্ছে। বাকি গাভী গুলো খুব অল্পদিনের মধ্যে বাচ্চা দেবে বলেও তিনি জানান। প্রতিদিন গড়ে ১২০ কেজির বেশি দুধ বিক্রি হচ্ছে তার খামারে। এতে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার টাকা আয় হয়। যা থেকে মাসিক আয় হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
খামার মালিক বাসুদেব লস্কর জানান, নিজের প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা স্বপ্নের খামারে নিয়মিত মাসিক চুক্তিতে দুজন শ্রমিক কাজ করেন। তিনি ও তার স্ত্রী সব সময় দেখাশোনা করেন।
গরুর খাবারের জন্য তার নিজ জমিতে ঘাস চাষও করেছেন। ঘাসের পাশাপাশি খৈল ও ভূসি জাতীয় খাবার দৈনিকের খাবারের তালিকায় রয়েছে। গরুর খাবার, ওষুধ খরচ, কর্মচারী বেতন ও অন্যান্য খরচ বাদে প্রতিবছর অধিক লাভবান হন তিনি। নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে বাজারে দুধ বিক্রি করে হয়ে উঠেছে স্বাবলম্বী। দুধ বিক্রির টাকায় চলে তাদের সোনার সংসার।
তবে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পেলে খামারটি আরো বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। ভবিষ্যতে নিজেকে একজন মডেল খামারি হিসেবে গড়ে পরিচিত পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই খামারি।
নড়াইল সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, আমরা প্রানী সম্পদ অফিস থেকে খামারটির খোঁজ খবর নিয়ে থাকি। খামারিকে বিভিন্ন রকম দিক- নির্দেশনা দিয়ে থাকি। আশা করি জেলায় তার এই খামারটি একটি মডেল খামারে রুপান্তরিত হবে।
খুলনা গেজেট/এমএম