দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা হাতে নিয়েছে “গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি”। সোমবার (২৬ আগস্ট) টানা ৫ম দিনের মতো অব্যহত থাকবে এই কর্মসূচি।
তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের কর্মসূচিতে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শত শত মানুষকে সাহায্যের জন্য এবং এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে এগিয়ে আসছেন সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ রেজিস্ট্রার জি এম লুৎফর রহমান। তিনি বন্যার্তদের সাহায্যার্থে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন নগদ দশ হাজার টাকা। এ নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়াতে সকাল ১০ টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলমান এই কর্মসূচিতে তৃতীয় দিন পর্যন্ত সর্বমোট সংগ্রহ ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫৩ টাকা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত অফিশিয়াল ফেসবুক গ্রুপ “Two Zero” নামক গ্রুপে এ তথ্য জানানো হয়।
এ গ্রুপের তথ্য মতে, গতকাল রবিবার (২৫ আগস্ট) অর্থাৎ চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা ৪৭ হাজার টাকা, লিও ক্লাব অফ খুলনা ৫০ হাজার টাকা, ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি অ্যালামনাই ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ২৫ হাজার টাকা প্রদান করেছেন।
এসব সংগ্রহকৃত টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনে আকস্মিক বন্যাকবলিত এলাকা ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং তীব্র জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত খুলনার পাইকগাছায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি টিম।
ফেসবুক গ্রুপ “Two Zero”এর বরাতে জানা গেছে,আজ বন্যা কবলিত ফেনীতে এক হাজার এর বেশি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে। গতকাল ২৫ আগস্ট খুলনার পাইকগাছাতে ২০০ পরিবারের মধ্যে এবং খাগড়াছড়িতে ১৫০ টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।এর পূর্বে ২৪শে আগস্ট পাইকগাছায় এক পিকআপ ট্রাক ভর্তি ত্রাণ সামগ্রী এবং খাগড়াছড়িতে ১২৫ টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আজাদ মিয়া বলেন,”মানুষ ঘরের চালে উঠেও ঠাঁই পাচ্ছে না, হাঁড়িতে ভাসিয়ে রাখা হচ্ছে শিশুদের, গরু মরে ভেসে যাচ্ছে, খামারের হাজার হাজার মুরগী পানিতে ডুবে মরেছে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে। বৃদ্ধ আর অসুস্থ মানুষদের কষ্টের কথা বলাই বাহুল্য।দেশের এই অবস্থায়, আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাই মানুষের প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে। এজন্য আমাদের এই কর্মসূচি। আর আমাদের পর্যাপ্ত পরিধেয় কাপড় সংগ্রহ হওয়ায় বর্তমানে ঔষধ, শিশুখাদ্য, শুকনা খাদ্যদ্রব্য, চাল, ডাল, তেল, এছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী প্রদানে উৎসাহিত করছি। এই ক্রান্তিকালে সবাইকে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।”
খুলনা গেজেট/এএজে