অবশেষে খুলনাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি বাস্তবায়নের হতে যাচ্ছে। খুব দ্রুতই দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে ‘খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ এর কার্যক্রম। ২০১৩ সালে প্রকল্পটির অনুমোদন হলেও জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে দৃশ্যমান কার্যক্রম চোখে পড়েনি। দীর্ঘ সাত বছর ধরে জমি অধিগ্রহণের সব ধরণের জটিলতার অবসান শেষে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সড়কটি ৩ দশমিক ৭৭৮ কিলোমিটার লম্বা এবং ৬০ ফুট প্রশস্ত হবে।
জানা যায়, প্রায় ২৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যমান অপ্রশস্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন, রূপসা ব্রিজ অ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে খুলনা শহরে প্রবেশের জন্য স্বল্পতম দূরত্বের সড়ক নির্মাণ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যানজট হ্রাস করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন। এসময় রাজধানী শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে একনেক সভায় যুক্ত ছিলেন।
খুলনা উন্নয়ন কতৃপক্ষের (কেডিএ) সূত্র জানায়, নগরীর রূপসা মোড় থেকে খানজাহান আলী সেতু যাওয়ার সড়কটি খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক হিসেবে পরিচিত। সড়কটির মাধ্যমে শহর থেকে সহজেই সেতু হয়ে রূপসা বাইপাস সড়কে যাওয়া যায়। এছাড়া সড়কের দুইপাশে রয়েছে অংসখ্য শিল্প কারখানা । কিন্তু সড়কটির প্রশস্ততা কম এবং নদীর জোয়ারের পানির কারণে বছরের প্রায় সব সময়ই রাস্তাটির অবস্থা থাকে নাজুক। যার ফলে যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কেডিএ’র উদ্যোগে সড়কটি প্রশস্তকরণ এবং উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৩ সালে প্রকল্পটির অনুমোদনও করা হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণে বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। আন্দোলন, মানববন্ধন, মামলার মত সমস্যা মেটাতে সময় লেগেছে অনেক।
এদিকে সাত বছরে আগে প্রকল্প ব্যয় যা দিয়ে শুরু করা হয়েছিল তা সময়ের কারণে অনেকগুণে বেড়ে গেছে। যার কারণ হল ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, সড়কের ডিজাইন পরিবর্তন, সর্বশেষ রেট সিডিউল অনুযায়ী ব্যয় প্রাক্কলন। ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ব্যয় প্রায় ১’শ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। যার বেশিরভাগই জমি অধিগ্রহণের জন্য। প্রকল্পটির শুরুতে মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে বিশেষ সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে ১২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা করা হয়। এখন প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৩২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ২৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা।
খুলনা গেজেটকে কেডি’এর একটি সূত্র মঙ্গলবার জানান, প্রকল্প অনুমোদন হয়েছিল ২০১৩ সালে। আজ একনেক সভায় খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণের প্রায় ১’শ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। খুব দ্রুত আমরা সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়নের কাজ শুরু করব। খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি অবশেষে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে।
খুলনা গেজেট / এনআইআর