খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল ও ডিসিপ্লিনসমূহের নামকরণ বাংলায় করার উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতি‌বেদক

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিকে শুধু ভাষা আন্দোলন ভাবলেই চলবে না, এর গভীরতা অনেক। একুশের হাত ধরেই আমরা বাঙালি জাতিসত্ত্বার পরিচয় পেয়েছি। বাঙালি জাতীয়তাবাদ পেয়েছি। পৃথিবীতে বাঙালিই একমাত্র জাতি, যারা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে। মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে শাসকশ্রেণির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেছে। পরবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনগুলোর অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে আমাদের এই ভাষা আন্দোলন। এর ফলেই আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি, উৎকর্ষ সাধন, বিকাশ, বহুমুখী চর্চা ও ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক ও গবেষণা গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ ও প্রকাশের আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে প্রকাশক পাওয়া না গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তা প্রকাশনায় সহায়তা করা হবে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল ও ডিসিপ্লিনের নামকরণ বাংলায় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এ মাসেই তা চূড়ান্ত হবে। উপাচার্য বলেন, আসুন সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে নিজেরা এগিয়ে যাই। আর নিজেদের হৃদয়ে বাংলা ভাষাকে ধারণ করি। সকলে বলি ‘আমি বাঙালি, আমি গর্বিত’।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. রুবেল আনছার। সভাপতিত্ব করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের পক্ষে মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকী। আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তরুণ কান্তি বোস, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এস এম মনিরুজ্জামান (পলাশ)। সভায় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ৬টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলনের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রভাতফেরি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পৌঁছায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সেখানে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এ সময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর পরপরই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, ডিসিপ্লিনসমূহ, আবাসিক হলসমূহ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, এ্যালামনাই এসোসিয়েশন এবং আশপাশের স্কুল-কলেজের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি নেভাল ও আর্মি উইংয়ের ক্যাডেটরা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান পালনে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।

শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর উপ-উপাচার্য আইন ডিসিপ্লিনের কর্তৃক প্রকাশিত একুশের স্মরণিকা দেয়াল ভাঙার গান এর পঞ্চম সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন। এসময় আইন স্কুলের ডিন ও আইন ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত এবং ডিসিপ্লিনের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাদ যোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্বালন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম  




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!