খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
  শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২

খুলনায় মাস্কের ব্যবহার বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছয় বছর বয়সের তাসিকন হোসেন মাস্ক পরে বাবার কোলে চড়েছে। বাবা জিয়াউর রহমানেরও নাকমুখ মাস্কে ঢাকা। নিউমার্কেটের সামনের ফুটপাত ধরে হাঁটছিলেন তিনি। ছেলে অস্বিস্ত বোধ করছিল নাকমুখ ঢাকাতে। কিন্তু বাবা সতর্ক, ছেলে যেন মাস্ক খুলতে না পারে, সে জন্য হাত দিয়ে আটকে রেখেছেন।

জিয়াউর রহমান একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকুরি করে। তিনি বলেন, ‘বাতাসে ধুলোবালির জন্য আমি আগেও বাইরে বের হলে অধিকাংশ সময়ই মাস্ক পরেই চলাফেরা করতাম। তবে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে সুরক্ষার জন্য নিয়মিতই মাস্ক ব্যবহার করছি। পরিবারের সবার জন্যও মাস্ক কিনেছি।’

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। মাস্ক না পরে বাইরে বের হওয়া ব্যক্তিদের আটক ও জরিমানা করছেন। গত সোমবার থেকে খুলনা মহানগরীর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

চীন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়েছে। হাঁচি-কাশিতে ছড়ানো ছোঁয়াচে এ রোগটি থেকে সুরক্ষা পেতে মাস্কের ব্যবহার বেড়েছে। ফলে বাজারে মাস্কের দামও বেড়েছে, সঙ্গে সংকটও তৈরি হয়েছে।

শনিবার (১৪ নভেম্বার) সন্ধ্যার পরে নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে অনেক শিক্ষার্থীকে মাস্ক পরে চলাফেরা করতে দেখা যায়। খুলনা বিএল কলেজের বাংলাবিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বৈশায়ণ বিশ্বাস জানান, ‘কিছুটা শ্বাসকষ্ট থাকায় মাস্ক পরলে সমস্যা হতো, তাই ব্যবহার করতাম না। করোনাভাইরাসের কারণে এখন সমস্যা হলেও পরার চেষ্টা করি।’ তিনি টুটপাড়া এলাকার একটি ম্যাসে থাকেন। সেখানেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার বেড়েছে বলে তিনি জানান।

নিউমার্কেটের একটি দোকানি রেজাউল হোসেন তাঁর দোকানের ভেতর মাস্ক পরে ছিলেন। তিনি বলেন, দোকানে অনেক ক্রেতা আসেন। কে কখন ভাইরাসটি নিয়ে আসেন ঠিক নেই। সেই আশঙ্কা থেকেই বর্তমানে মাস্ক পরে থাকেন।

করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত উদ্বেগে বাজারে মাস্কের দাম আগের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। করোনা থেকে নিজেকে সুরক্ষার জন্য হলেও সুরক্ষাসামগ্রী হিসেবে-এ ব্যবহার করছেন মানুষ। সুরক্ষাসামগ্রীর মধ্যে সার্জিক্যাল মাস্ক, ফেস মাস্ক কেএন ৯৫ ও এন ৯৫। শহর ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রত্যেক মানুষের মুখে সুরক্ষাসামগ্রী হিসেবে মাস্ক পরতে।

মহানগরীর শান্তিধাম মোড়ের মেডিকম ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী তুহিন ইসলাম জানান, কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। মাস্ক না পরে বাইরে বের হওয়া ব্যক্তিদের আটক ও জরিমানা করছে। যে কারণে মানুষ মাস্ক পরতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে মাস্ক বিক্রি বহুগুণ বেড়ে গেছে।

খুলনা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইউসুপ আলী বললেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক অনুযায়ী মাস্ক না পরে ঘর থেকে বের হওয়া ব্যক্তিদের কারাদণ্ড দেওয়া হবে। এর আগে প্রথম পর্যায়ে সংক্রমণ ঠেকাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অনেককে জরিমানা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা আসেনি। এ কারণেই এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাস্ক না পরে বাইরে আসা ব্যক্তিদের প্রাথমিকভাবে আটক করা হচ্ছে। পরে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

 

খুলনা গেজেট / এআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!