খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ মাঘ, ১৪৩১ | ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  ফসল কাটা নিয়ে চাঁপাই নাবাবগঞ্জ চোকা-কিরণগঞ্জ সিমান্তে উত্তেজনা, ককটেল বিস্ফোরণ বেশ কয়েকজন আহত; সমাধানের চেষ্টায় বিজিবি-বিএসএফ
  বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার

খুলনায় আমন ধানের নতুন ৬টি জাত উদ্ভাবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন ছয়টি আমন ধানের জাত উদ্ভাবনে সফল হয়েছেন কৃষক আরুনী সরকার। লোকজের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের ধারাবাহিকতায় খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের এ কৃষক দেশীয় প্রজাতির ১০টি জাতকে মাদার ও ১০টি জাতকে ফাদার করে ইমাসকুলেশন ও পলিনেশনের মাধ্যমে ব্রিডিং করে ধানের নতুন ছয়টি জাত উদ্ভাবনে সফল হন।

রবিবার (১৮ জুলাই) ইউনিয়নের স্টার ইউনিট প্রাঙ্গনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রস্তাবিত ধানগুলোর নাম (আলো ধান, লোকজ ধান, আরুণি ধান, গঙ্গা ধান, মৈত্রী ধান, লক্ষীভোগ ধান) গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তুলে ধরা হয়।

২০১০ সালে ব্রিডিং প্রশিক্ষণ নিয়ে ইমাসকুলেশন ও পলিনেশনের মাধ্যমে ব্রিডিং করে নতুন জাত উদ্ভাবনে সফল কার্যক্রম ২০২০ সালের আমন মৌসুমে শেষ হয়। উদ্ভাবিত এই নতুন জাতগুলোর মধ্যে বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, মাদার ফাদার থেকে ফলন বেশি, গাথুনি ঘন, শীষ লম্বা, দুর্যোগ সহিষ্ণু ও মাদার ফাদার থেকে জীবনকাল কম। নতুন এই ছয়টি জাত এলাকা উপযোগি ও ইতিবাচক হওয়ায় ইতোমধ্যে এলাকার কৃষকরা এই সকল ব্রিডিং ধানের বীজ সংগ্রহ করছেন।

নতুন জাতের উদ্ভাবক কৃষক আরুনী সরকার খুলনা গেজেটকে জানান, আমি ২০১০ সালে পিরোজপুরের বুলিশাখালী গ্রামে ছয় দিনের একটা ট্রেনিং নেই। সেখানে ফিলিপাইনের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর ট্রেনিংয়ে আমাদের ধানের কাটিং, পরাগায়ন, জাত নির্বাচন করতে শেখান। তারপর থেকে আমি দেশীয় ৩৬ রকমের জাত থেকে ২০ টি জাত নির্বাচন করি এবং নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ শুরু করি। এ বছর আমি ১০ কাঠা জমিতে ১১ মণ ধান পেয়েছি, সেখান থেকে সংগঠনে এবং গ্রামের কৃষকদের বীজ দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, “নতুন জাতের ধান গায়ে মোটা, লম্বা ও শক্ত এজন্য পোকা কম, বাঁচেও বেশি। নতুন জাতের ধানের চাল খেতেও সুস্বাদু। গত বছর ধানের ফলন ভালো দেখে সবাইকে আমি বীজ দেই কি না দেই এই সংশয়ে কোদলাহর বিল থেকে কে বা কারা আমার তিনশ আটি ধান চুরিও করেছে।”

কৃষক দেব জ্যোতি মহালদার বলেন, আরুনী ধান ৪ বছর ধরে চাষ করছি। প্রথম দুই বছর ফলন খারাপ হয়েছিলো। তবে শেষ দুই বছর ফলন বেশ ভালো। অন্য ধান বিঘা প্রতি ১২ -১৫ মণ পেতাম, এই ধান পাই ২০ মণ।

লোকজ এর সভাপতি গৌরাঙ্গ নন্দী বলেন, এখন আমাদের কাজ হবে এই ধানের চাষ আরো বৃদ্ধি করা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সয়েল ক্যারেকটার প্রায় একই রকম, সুতরাং এই অঞ্চলে নতুন জাতের ধানের ফলন ভালো হবে। আশা করছি এই নতুন জাতের ধান বিকশিত হবে, প্রতিষ্ঠা পাবে সারা দেশে।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লোকজ এবং মৈত্রী কৃষক ফেডারেশনের আয়োজন ও মিজারিওর জার্মানী সহযোগিতায় সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন লোকজের সভাপতি ও সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দী। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মন্ডল। লোকজের নির্বাহী পরিচালক দেবপ্রসাদ সরকারের সঞ্চালনায় এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গঙ্গারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ মো: হাদি-উজ-জামান হাদী, কৃষক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আশালতা ঢালী, সহ-সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান লাভলু ও ব্রিডার কৃষক আরুণি সরকার, কৃষক দেবজ্যোতি মহালদার ও তরুণি সরকার।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!