খুলনা নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়ার সন্তান। জন্ম নেন ১৯৪৫ সালের ২৫ মার্চ। পিতা মৃত শেখ আব্দুস সামাদ ও মাতা মৃত জোহরা খাতুন। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। তিনি আজীবন বাঙালি জাতীয়তাবাদের আদশ্যের সৈনিক। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। ৬৯’র গণআন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
৭০’র নির্বাচনে বিজয়ের পর পাক সেনাদের আক্রমণে দেশের মানুষ ক্ষত বিক্ষত হতে থাকলে তিনি এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি বটিয়াঘাটা উপজেলার খারাবাদ বাইনতলা গ্রামে চাচাতো ভাই এর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে কয়েকদিন পর পায়ে হেটে ডুমুরিয়ার শরাফপুরের ভেতর দিয়ে তালার শাহাজাদপুরে আলী চেয়ারম্যানের বাড়িতে যান। চেয়ারম্যান তার পূর্ব পরিচিত থাকায় সেখানে ২-৩ দিন অপেক্ষার পর তার ছোট ভাই সাত্তারসহ দু’টি হেলিকপ্টারযোগে (বাই সাইকেল) পাটকেলঘাটা হয়ে সাতক্ষীরার ভেতর হয়ে ভোমরা সীমান্তে যান। সীমান্ত পার হয়ে সাতক্ষীরার মোস্তাফিজ ও দৌলতপুরের ইউনুছ আলী ইনুর সাথে তাদের দেখা হলে তারা তাদের বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং ক্যাম্পে নিয়ে যান। পরের দিন মুস্তাফিজের সাথে বশিরহাটে বাংলাদেশ সহায়ক সমিতিতে যান। সেখানে দীলিপ ব্যানার্জী ও ঘ্যাস দা নামে দু’জন ব্যক্তির সাথে পরিচিত হন। তাদের সাথে কথা হয় দীলিপ ব্যানার্জী তার গাড়িতে করে কলকাতার বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির অফিসে পৌঁছে দেবেন। সেখানে পৌঁছে কয়েকদিন পর সিরাজুল আলম খান, রাজ্জাক আলী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিশেষ আলাপের জন্য দিল্লীতে যান।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ শেষে কলকাতায় ফিরে আসেন এবং প্রথম ব্যাচে দেরাদুন মিলিটারি একাডেমি টাঙ্গুয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য যান। প্রশিক্ষণ শেষে ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্টে ফিরে আসেন এবং বশিরহাটে বিএলএফ রিক্রুটিং কাজে নিয়োজিত থাকেন।
যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, যাতায়াত, অস্ত্র সংগ্রহ, চিকিৎসা ইত্যাদি নানাবিধ কাজে তিনি নিয়োজিত ছিলেন। ১৭ ডিসেম্বর খুলনা স্বাধীন হলে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। ১৯৭৩ সালে খুলনা পৌরসভার লিয়াকতনগর ইউনিয়নের কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে খুলনা সদর আসন থেকে খান এ সবুরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বীয়তা করেন। ১৯৯৭ সালের৬ জানুয়ারি ইন্তেকাল করেন, টুটপাড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ