আজ রোববার থেকে খুলনার দুই জোড়াসহ নতুন করে ১৩ জোড়া ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব রুটের যাত্রীবাহী আন্তনগর ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।
রবিবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে বিভিন্ন রুটে এই ১৩ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-পরিচালক (টিটি) খায়রুল কবির স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ১৬ আগস্ট থেকে ১৩টি ট্রেন চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, খুলনা থেকে তিন জোড়া ট্রেন এবং একদিন পর একদিন একটি মালবাহী ট্রেন চলাচল করতো। গত ৩ জুন ঢাকা-খুলনা রুটে চিত্রা, খুলনা-রাজশাহী রুটে কপোতাক্ষ এবং খুলনা-চিলাহাটী রুটে রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এছাড়া একদিন পর একদিন একটি মালবাহী ট্রেন খুলনা-চিলাহাটী রুটে চলাচল করছে। আজ (রবিবার) রাত থেকে আরও ২ জোড়া ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। এ দুটি ট্রেন হচ্ছে- খুলনা-ঢাকা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং খুলনা-চিলাহাটী রুটে সীমান্ত এক্সপ্রেস। সবমিলিয়ে আজ থেকে ৫টি ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। বাকীগুলো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালনা করা হবে।
তিনি আরো জানান, খুলনা রেল স্টেশন থেকে কোন যাত্রীকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। অনলাইনে সকল টিকিট বিক্রি হবে। যাত্রীরা শুধুমাত্র ট্রেনে উঠা এবং নামার জন্য প্লাটফর্মে আসবেন। পূর্বের তিনটি ট্রেন সকালে ছেড়ে যায় এবং আজ থেকে চালু হওয়া ট্রেন দুটি খুলনা থেকে ছেড়ে যাবে রাতে।
১৩ জোড়া ট্রেনগুলোর মধ্যে রয়েছে-রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে পদ্মা এক্সপ্রেস, ঢাকা-সিলেট-সিলেট রুটে পারাবত এক্সপ্রেস, ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটে হাওড়া এক্সপ্রেস, ঢাকা-তারাকান্দি-ঢাকা রুটে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস, রাজশাহী-চিলাহাটি-রাজশাহী রুটে তিতুমীর এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে মহানগর এক্সপ্রেস, পঞ্চগড়-ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে একতা এক্সপ্রেস, খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে বিজয় এক্সপ্রেস, ঢাকা-নোয়াখালী-ঢাকা রুটে উপকূল এক্সপ্রেস, খুলনা-চিলাহাটি-খুলনা রুটে সীমান্ত এক্সপ্রেস, গোবরা-রাজশাহী-গোবরা রুটে টঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস। এছাড়া ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-ঢাকা রুটে জামালপুর কমিউটার ট্রেন চালানো হবে।
এদিকে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তনগর ট্রেনের টিকিট আগের মতো অনলাইনে ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। যাত্রার দিনসহ পাঁচ দিন পূর্বে আন্তনগর ট্রেনসমূহের অগ্রিম টিকিট ইস্যু করা যাবে। যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোচের ধারণক্ষমতার শতকরা ৫০ ভাগ টিকিট বিক্রি করা হবে। আন্তনগর ট্রেনে সকল প্রকার স্ট্যান্ডিং টিকিট সম্পন্ন বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানের মোট ১৭ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। আজ রেলের বহরে যুক্ত হলো আরও ১৩ জোড়া ট্রেন। সব মিলিয়ে এখন চলাচল করা ট্রেনের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৩০ জোড়ায়।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, পর্যায়ক্রমে আগামী ৩১ শে আগস্টের মধ্যে সব ট্রেনের চাকাই সচল হবে। করোনার ঝুঁকি মাথায় রেখে এখনো রেলের সব টিকেট অনলাইনেই বিক্রি হচ্ছে। তবে আজকে থেকে একজনের জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে কাটা টিকেটে অন্য যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৪ মার্চ থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় কিছু মালবাহী ট্রেন চলাচল অব্যাহত ছিল। গত ৩১ মে প্রথম দফায় আট জোড়া আন্তনগর ট্রেন চালু করা হয়। ৩ জুন দ্বিতীয় দফায় আরও ১১ জোড়া আন্তনগর ট্রেন বাড়ানো হয়। তবে কিছুদিন পর যাত্রী সংকটে দুই জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খুলনা গেজেট / এমএম