প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ছাড়ার পর আত্মগোপনে চলে গেছেন খুলনা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা। এর মধ্যে রয়েছেন– খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং মঙ্গলবার সংসদ ভেঙে দেওয়ায় সাবেক চার এমপি। তাদের সবার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। বাড়িতেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে সিনিয়র নেতারা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় উৎকণ্ঠায় রয়েছে কর্মীরা। হামলার ভয়ে অনেকে রাতে বাড়িতে থাকছে না।
লনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেকের বাড়িতে গত রোববার বিকেলে দুই দফা হামলা ও ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা। এর পরদিন ভোরে বাড়ি ছাড়েন তিনি। এখন কোথায় আছেন, তা বলতে পারছেন না কেউই।
জেলার সদ্য সাবেক চার এমপির মধ্যে খুলনা-১ আসনে ননী গোপাল মণ্ডলের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ।
স্থানীয়রা জানান, তিনি দাকোপ উপজেলার রামনগর গ্রামের বাড়িতে নেই। খুলনা-২ আসনে শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল এমপির বাড়ি নগরীর শেরেবাংলা রোডে। ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত বাড়িটিতে গত রোববার ও সোমবার কয়েক দফা হামলা, ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন দেওয়া হয়। এর আগে থেকেই ওই বাড়িতে নেই জুয়েল ও তাঁর তিন ভাই।
এ ছাড়া খুলনা-৩ আসনের বিদায়ী সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনের খালিশপুর এলাকার অফিস ভাঙচুর হয়েছে গত সোমবার। তিনি কোথায় আছেন তা জানে না স্থানীয়রা। এলাকা ছেড়েছেন খুলনা-৫ আসনের এমপি সদ্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দও। গত সোমবার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার পর এলাকা ছাড়েন তিনি।
তবে খুলনা-৪ আসনের এমপি শিল্পপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী ঢাকায় এবং খুলনা-৬ আসনের মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল কয়রা উপজেলায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ অসুস্থ। তিনি বাড়িতে রয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে আত্মগোপনে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার অধিকারীর বাড়িতে হয়েছে হামলা। আর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানাকে গত রোববার দলীয় কার্যালয় চত্বরে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন আন্দোলনকারীরা। তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রয়েছেন। পরদিন হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে নগরীর ট্যাংক রোডে তার বাড়িতে।
এ ছাড়া আত্মগোপনে চলে গেছেন খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ মো. আকতারুজ্জামান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর বেশির ভাগ নেতাকর্মী।
খুলনা গেজেট/হিমালয়