খুলনা মহানগরীর ইস্টার্ণগেট মশিয়ালী এলাকায় ট্রিপল মার্ডার মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আলমগীর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বুধবার (১২ আগস্ট) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ তরিকুল ইসলামের আদালতে এ আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ এনামুল হক ১০দিনের রিমান্ড আবেদন শুনানী শেষে এ আদেন দেন আদালত। মোঃ আলমগীর শেখ (৩৮) স্থানীয় মশিয়ালী গ্রামের মোঃ মোকছেদ শেখের ছেলে।
কেএমপি’র গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ এনামুল হক বলেন, যশোর কোতয়ালী থানা এলাকা থেকে ট্রিপল মার্ডার মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতারের পর আজ বুধবার তাকে আদালতে সোপর্দ করে ১০দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আলমগীরকে পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে রাখা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ পর্যন্ত মামলাটির এজাহারভুক্ত পাঁচজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত ও আসামী গ্রেফতার অভিযান একত্রে চলছে।
প্রসঙ্গত্ব, গত ১৬ জুলাই রাতে খুলনা মহানগরীর ইস্টার্ণগেটের মশিয়ালী এলাকায় শেখ জাকারিয়া বাহিনীর গুলিতে নিহত হন আটরা-গিলাতলা ইউনিয়নের মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম (৬০) ও একই গ্রামের মোঃ ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০)। এসময়ে গুলিবিদ্ধ হন মোঃ সাইফুল ইসলাম, আফসার শেখ, শামীম, রবি, খলিলুর রহমান ও মশিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন। গুলিবিদ্ধ সাইফুল ইসলাম পরদিন সকালে মারা যান। অপরদিকে, বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখকে নিহত হয়। এঘটনায় মোট ৪জন নিহতের ঘটনা ঘটেছিল।
পরে নিহত মোঃ সাইফুল ইসলামের পিতা মোঃ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় ২২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-১৬জনকে আসামী করে মামলা দায়ের (যার নং-১২, ১৮-৭-২০২০ইং) করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা হল- মশিয়ালী গ্রামের মৃত হাসান আলি শেখের ছেলে মোঃ মিল্টন শেখ (৪৫), মোঃ জাকারিয়া শেখ (৩৭), মোঃ জাফরিন শেখ (৩২) ও মোঃ কবির শেখ (৫০), একই এলাকার মোঃ নুরু শেখের ছেলে মোঃ রাজু শেখ (২৮), মোঃ ইলিয়াসের ছেলে মোঃ আশিক (২২), মোঃ মোকছেদ শেখের ছেলে মোঃ জুয়েল শেখ (৪০), মোঃ আলমগীর শেখ (৩৮), মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫) ও মোঃ মুরাদ শেখ (৩২), আব্দুল জব্বারের ছেলে মোঃ আরিফ (৩৩), মোঃ নুর ইসলামের ছেলে মোঃ হাসান (২০), মোঃ ফারুকের ছেলে মোঃ রবিন (২০), মোঃ ইনছার আলি ছেলে মোঃ বাবু (২০), মৃত আক্তার আকুঞ্জির ছেলে মোঃ রহিম আকুঞ্জি (২২), মৃত সালাম আকুঞ্জির ছেলে মোঃ তৌহিদ আকুঞ্জি (২২), মোঃ বাবুল শেখের ছেলে মোঃ মিঠু শেখ (৩৩), মৃত আদিল শেখের ছেলে মোঃ আজিম শেখ (৩৫), মোঃ নিজার শেখের ছেলে মোঃ নাজমুল শেখ (২২), মোঃ কুরবান শেখের ছেলে মোঃ আরমান শেখ (২০), মোঃ জমির উদ্দিনের ছেলে মোঃ মনিরুল (২৭) ও ইব্রাহিম শেখের ছেলে মোঃ নুর ইসলাম (২০)।
মামলাটিতে এ পর্যন্ত পাঁচজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসী শেখ জাকারিয়ার বাড়ীর সংলগ্ন এলাকা থেকে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও হত্যাকান্ডের মূল খলনায়ক শেখ জাকারিয়া ও তার ভাই মিল্টনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে এখনো চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খুলনা গেজেট/এআইএন