খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৪৫
  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

খুলনাঞ্চলের চিংড়ি রপ্তানিতে করোনার বড় ধাক্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারী করোনার কারণে খুলনাঞ্চলে চিংড়ি রপ্তানিতে ধ্বস নেমেছে। লকডাউন থাকার কারণে জার্মান, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র সকল এলসি বাতিল করেছে। খুলনাঞ্চল থেকে চিংড়ি রপ্তানি প্রতি মাসেই কমছে। স্থানীয় হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে দু’হাজার ডলার মূল্যের চিংড়ি মজুদ রয়েছে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ২৯৩ ডলার মূল্যের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয়। রপ্তানি হয়েছে শুধুমাত্র চীন ও রাশিয়ায়। নেদারল্যান্ড, জাপান, জার্মান ও যুক্তরাষ্ট্র সকল এলসি বাতিল করেছে। মার্চ মাসে উল্লিখিত দু’দেশে ১১ লাখ ৭০ হাজার ডলার মূল্যের চিংড়ি রপ্তানি হয়। এপ্রিল মাসে রপ্তানির পরিমাণ ৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৭৬ ডলার। এপ্রিলে চীন, কানাডা ও রাশিয়ায় রপ্তানি হয়। এ সময় জাপানে ৬৬ হাজার ডলার মূল্যের কাঁকড়া রপ্তানি হয়। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে এ অঞ্চল থেকে ৭০ লাখ ৭৫ হাজার ডলার মূল্যের চিংড়ি রপ্তানি হয়।

কোভিড-১৯ এর কারণে ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি আদেশ একের পর এক বাতিল হওয়ায় সংকটের মুখে পড়েছে হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া হিমায়িত খাদ্যের অর্ধেক যায় যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে। দেশগুলো হলো জার্মান, জাপান, চীন, বেলারুস, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য ও বেলজিয়াম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ২০ শতাংশের মতো রপ্তানি হয় বেলজিয়ামে। করোনা ভাইরাসের মহামারীতে আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় দেশগুলো। এসব দেশ লকডাউনে থাকায় গত একমাসে ২৯০টি হিমায়িত চিংড়ির এলসি বাতিল করেছে বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। যার আর্থিক মুল্য প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবেলায় মাছ কোম্পানিগুলো আপাতত চাষিদের কাছ থেকে চিংড়ি ক্রয় কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দেশের উপকূলীয় এলাকার প্রায় পাঁচ লক্ষ চিংড়ি চাষী ও চিংড়ি মাছ প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানিগুলোতে কর্মরত আরো পঞ্চাশ হাজার শ্রমিকের ভাগ্য অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছে।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফিশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সূত্র বলেছে, দেশের হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির বড় অংশই চিংড়ি। প্রক্রিয়াকরণ শেষে হিমায়িত খাদ্য বিশে^র ৬০টি দেশে রপ্তানি হয়। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া হিমায়িত চিংড়ির অর্ধেক যায় যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় দেশগুলোয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ২০ শতাংশের মতো রপ্তানি হয় বেলজিয়ামে। চিংড়ি ছাড়াও কাঁকড়াসহ আরও কিছু পণ্য থেকে আয় আসে এ খাতে। করোনার কারণে বিদেশি বায়াররা হিমায়িত চিংড়ি কিনতে অনীহা প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন বলেন, চলতি অর্থবছরে বিদেশি বায়ার যারা এলসি খুলেছিল লকডাউনের কারণে তারা আর হিমায়িত চিংড়ি কিনতে রাজী হচ্ছে না। ফলে স্থানীয় রপ্তানিকারকরা সংকটে পড়েছে।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, বিশ্বের মোট চিংড়ি রপ্তানির ৭৭ শতাংশই এখন ভেন্নামির দখলে। আর বাগদা চিংড়ির দখলে মাত্র ১১ শতাংশ। বর্তমানে ভেন্নামি চিংড়ির চেয়ে বাগদা চিংড়ির দাম পাউন্ড প্রতি ২ ডলার বেশি। বৈশ্বিক অর্থনীতির স্লথ গতির কারণে ক্রেতারা খরচ কমানো শুরু করেছেন। আর তাই আমাদের চিংড়ির চাহিদা আরও কমছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!