তেরখাদা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় খাসজমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন্দোবস্ত ছাড়াই এসব জমিতে ঘরবাড়ি, দোকান, পাকা স্থাপনা, নদীর পাড় দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। কেউ কেউ ভুয়া খতিয়ান খুলে জমির মালিকানা দাবি করে ভোগদখল করছে। আর এসব হচ্ছে কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৭৪৯.৬০ একর খাসজমি রয়েছে। এসব জমির মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১ হাজার ৫৩১ টি পরিবারের মাঝে ঘর নির্মাণ করে প্রায় ৩০.৬২ একর জমি ভূমিহীনদের নামে দলিল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৬০৭.৯৮ একর জমি বিভিন্ন সময়ে বন্দোবস্ত দিয়েছে সরকার। বাকি জমির একটি বড় অংশ কোনো কাগজপত্র ছাড়াই প্রভাবশালীরা দখলে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার সদরের চিত্রা নদীর অববাহিকায় গড়ে ওঠা চর, কাটেংগা, জয়সেনা, তেরখাদা সহ বিভিন্ন হাটবাজারে সরকারের জমি, খাল-বিল এবং ৬ ইউনিয়নের এসব জমি বন্দোবস্ত ছাড়াই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছে।
জানা যায়, গত ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন চিত্রা নদীর পাড় ঘেষা ডাকবাংলো হতে নাচুনিয়া ব্রিজ পর্যন্ত অবৈধভাবে দখল করে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতি উচ্ছেদ করে দখলমুক্ত করেন উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও সদরের ৩টি বাজার সহ বিভিন্ন যায়গার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তী সময়ে ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকার পতনের পর স্থানীয় একটি মহল ঐ উচ্ছেদকৃত জায়গা ও ফুটপাত ফের দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান শুরু করে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী ফখরুল ইসলাম বুলু বলেন, কাটেংগা, জয়সেনা ও তেরখাদা বাজার সহ চিত্রা নদীর পাড়ের সরকারি জমি দখল করে শত শত দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এসব দোকান নির্মাণের ফলে নদী ছোট হয়ে গেছে এবং ধীরে ধীরে নদীটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব দখলকৃত জমি দখলমুক্ত করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খাসজমি দখলের বিষয়ে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সরকারি জমি উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ