বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। খালেদা জিয়ার হৃদপিণ্ডে আরও দুটি ব্লক পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, শনিবার বেলা দুইটা থেকে খালেদা জিয়াকে ৭২ ঘণ্টার জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত উনি শারীরিকভাবে যে অবস্থায় আছেন, ডাক্তারদের বক্তব্য হল, ৭২ ঘণ্টা না গেলে কোনো কমেন্ট করা ঠিক হবে না। সেজন্য উনারা কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছেন।
সিসিইউতে খালেদাকে কার্ডিওলস্টিদের পর্যবেক্ষেণে রাখার কথা জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, গতকাল ম্যাডামের হার্টে এনজিওগ্রাম করার পর তিনটা ব্লক পাওয়া যায়। একটা ব্লক মেইন গ্রেট ভেসেল, যেটা লেফট সাইডে, সেটায় মোর দ্য ৯৫% ব্লক ছিল। বাকি দুটি ব্লকের আচরণ কেমন হবে তা এখন বলা মুশকিল। বর্তমানে হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল খালেদা জিয়াকে দেখভাল করছেন বলেও জানান তিনি।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুক্রবার রাত ৩টা ২০ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।
শনিবার সকালে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড বৈঠক করে জরুরিভিত্তিতে এনজিওগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুপুরে অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে এনজিওগ্রাম করা হলে ব্লক ধরা পড়ায় সেখানে রিং পরানো হয়।
২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। তৃতীয় দফায় প্রায় ৩ মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছে তাকে।
তখন পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও বহু বছর ধরে তিনি আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এর আগে সর্বশেষ ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেওয়া হয়।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে গুলশানের ভাড়া বাসায় থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৭ বছর বয়সি খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠাতে কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ