খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিশ্বকাপ বাছাই : মার্টিনেজের ভলিতে পেরুর বিপক্ষে জয় পেল আর্জেন্টিনা

ক্ষেতেই রয়ে যাবে এবারের শীতের সব্জি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ডুমুরিয়ায় এক ইঞ্চি জমি খালি নেই। আবাদ হয়েছে বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, ওলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক, সীম, বরবটি, মুলাসহ অন্যান্য সব্জির। শীতের পরশের আগেই ভালো দাম পায় কৃষক। বেগুন থেকে সীম পর্যন্ত প্রতি কেজি মৌসুমের শুরুতেই ৮০ টাকা দরে শুরু হলেও এখন এসব সব্জি ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শ্রমিক ও পরিবহন খরচ উঠছে না। প্রতি সপ্তাহে কৃষক আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলে কৃষকের আশংকা জানুয়ারির প্রথমদিকে ক্ষেতেই রয়ে যাবে শীতের সব্জি।

জেলার ফুলতলা, ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা ও দিঘলিয়ায় ছয় হাজার হেক্টর জমিতে সব্জির আবাদ হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত সব্জি খুলনার ট্রাক টার্মিনাল কাঁচা বাজার, ডুমুরিয়া, সাহাপুর, মালতিয়া, যশোর ও ঢাকায় যাচ্ছে। পাশাপাশি যশোরের কেশবপুর ও মনিরামপুরে উৎপাদিত সব্জি এ অঞ্চলের বাজারে আসছে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হয়েছে। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষক ব্যাপক জমিতে সব্জির আবাদ করে।



ডুমুরিয়ার বরাতিয়া গ্রামের কৃষক প্রশান্ত মল্লিক সীমের আবাদ করেছেন। দেড় বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেন। এ জমির চারিপাশে সীমের আবাদ। আইরেট জাতীয় সীমের উৎপাদন বেশি হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথমদিকে প্রতি কেজি ১০টাকা দরে বিক্রি হয়। গত বুধবার দাম আরও কমে যায়। এ গ্রামের ৫শ’ কৃষক সীমের আবাদ করেছেন। এই কৃষকের ধারণা জানুয়ারির প্রথমদিকে প্রতি কেজি সীম পাঁচ টাকা দরে বিক্রি হতে পারে।

একই গ্রামের ললিত দাস জানান, ফুলকপি ও সীমের আবাদে তাকে লোকসান গুনতে হবে। শীতের সব্জি চাষের জন্য তার ছেলেরা সুদে মহাজনের কাছ থেকে টাকা নেয়। টাকা এবার শোধ হবে না।

গোবিন্দকাটি গ্রামের লিটন মোড়ল দুই বিঘা জমিতে লাল শাক চাষ করে ২০ হাজার টাকা লাভবান হয়েছে। টমেটো ও ফুলকপিতে তার লোকসান হচ্ছে। একইগ্রামের মো: হাবিবুর রহমান দুই বিঘা জমিতে বেগুন ও ফুলকপির আবাদ করেছে। খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। বিক্রি হয়েছে ১০ হাজার টাকা। কৃষক হাবিবুর রহমান চিন্তিত বোরো আবাদের জন্য পকেটে পুঁজি নেই।

ঠাকুন্দিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজ গাজী ও মালতিয়া গ্রামের কাজী মজিদ বেগুন ও টমেটোর আবাদ করেছেন। আরশনগর গ্রামের সঞ্জয় দেবনাথ বাঁধাকপি, টমেটো ও মুলার আবাদ করেছেন। চার বিঘা জমির সব্জি বিক্রিতে তার উৎপাদন খরচ উঠছে না।



মালতিয়া গ্রামের লতিফ গাজী, শুভঙ্কর কুন্ডু, আকাম গাজী, তফসে শেখ বেগুনের আবাদ করেছেন। শুভঙ্কর কুন্ডু জানান, তিনি কাঁচামালের আড়তে ৭টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করেছেন। বড় অংকের টাকা লোকসান দিতে হবে। বোরো আবাদের জন্য সেচ, শ্রমিক ও সারের অর্থ যোগান দিতে তাকে হিমশিম খেতে হবে।

ঠাকুন্দিয়া, আরশনগর ও বরাতিয়া গ্রামের কৃষকদের ভাষ্য ২০১৪ সালে টমেটো প্রতি কেজি দু’টাকা মূল্য হওয়ায় কৃষক তার উৎপাদিত টমেটো বাজারে নিয়ে যায়নি, ক্ষেতেই পড়েছিল। আগামী মাস নাগাদ কৃষক ক্ষেতের ফসল আর হয়তো তুলবে না। ফসল তুললে পরিবহন ও দিনমজুরের খরচ উঠবে না। এবারও ডুমুরিয়া ও ফুলতলার চাষিদের উৎপাদিত খাদ্য গো-খাদ্যে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!