ক্ষমতাসীনরা মিথ্যাচার করে জিয়াউর রহমানকে খাটো করার অপচেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যিনি যুদ্ধ করলেন, একই সঙ্গে যিনি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। অথচ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখবেন, তার সম্পর্কে মিথ্যা সব কথা বলে তাকে খাটো করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আসলে আওয়ামী লীগের যে কেমেস্ট্রি তা হচ্ছে দলীয়করণের কেমেস্ট্রি। সেখানে নিরপেক্ষতা অথবা দলের বাইরে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা-এটা তাদের মধ্যে নেই।’
রোববার দুপুরে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর ৫১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে গোটা রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। এটা তাদের আদর্শগত, নীতিগত বলব। কারণ ১৯৭৫ সালে তারা একদলীয় শাসন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। আমরা তো সেগুলো ভুলে যাইনি। যদিও আজকে সব কিছু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতো সহজে সত্যকে তো ঢেকে দেয়া যায় না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই সময়ে খেলাধুলা বলুন, গান-বাজনা বলুন আর রাজনীতি বলুন কোনটাই দলীয়করণের বাইরে নয়। আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম সেই চেতনাটি ছিলো গণতান্ত্রিক চেতনা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করার চেতনা, গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ করবার চেতনা। সেই চেতনাকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।’
তিনি বলেন, ‘যারা আজকে জোর করে শাসন করছেন তারা সেই চেতনাকে বিনষ্ট করে দিয়ে একদলীয় ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এখানে খেলাধুলা আলাদা ব্যাপার নয়, ক্রীড়াঙ্গ আলাদা ব্যাপার নয়। পুরো রাষ্ট্রটাই এখন একটা দলের মধ্যে, চিন্তার মধ্যে চলে গেল।’
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম জোরদার করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি একজন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত মানুষ হিসেবে বলতে পারি, কর্মী হিসেবে বলতে পারি যে, আমাদের বারবার করে মনে করতে হবে আমাদের এই রাষ্ট্রের ভিত্তি যিনি তৈরি করেছেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে। গণতন্ত্রের জন্য যিনি সংগ্রাম করেছেন, এখনও করছেন, এখনো বন্দি অবস্থায় আছেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে। আমাদের স্মরণ করতে হবে আরেক লড়াকু সৈনিক যিনি নির্বাসিত থেকেও গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। তাদেরকে সামনে নিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটা উদারপন্থী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করতে হবে। এটা খুবই জরুরি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে আমাদের যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সেই রাষ্ট্রকে আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এখানে কে বিএনপি করে, কে আওয়ামী লীগ করে, কে সিপিবি করে, কে অন্যান্য দল করে ওটা বেশি ব্যাপার নয়। ব্যাপারটা হচ্ছে এই রাষ্ট্রকে সকলের কথায়, সকলের মতের চিন্তার স্বাধীনতা এবং জনগণের প্রতিনিধিদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম