খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

ক্ষমতার অপব্যবহারে রাষ্ট্রীয় জবাবদিহি কাঠামো প্রশ্নবিদ্ধ : টিআইবি 

গেজেট ডেস্ক

ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক পুলিশ ও র‌্যাবপ্রধানের অবৈধভাবে বিপুল অর্থসম্পদ অর্জন এবং তা অর্জনের চিত্র গভীর উদ্বেগজনক। উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের ক্ষমতার লাগামহীন অপব্যবহার বেনজীরদের মতো ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন তৈরি করছে, যা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জবাবদিহি কাঠামোকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। তাই ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত এবং সুরক্ষা প্রদানকারীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।

দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে। এ সময় জোর করে জমি দখলে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সাবেক পুলিশপ্রধানের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও জমির মালিকানার নতুন নতুন তথ্য প্রতিনিয়ত সামনে আসছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, প্রায় সব ক্ষেত্রেই তিনি ভয় দেখিয়ে দখল করেছেন, কিংবা প্রকৃত মালিককে জিম্মি করে জমি বিক্রিতে বাধ্য করেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই এসব জমির মালিক ছিলেন সংখ্যালঘুরা। আর এ কাজে নিজ বাহিনীর পাশাপাশি অন্যান্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সংস্থার সদস্যদের যথেচ্ছ ব্যবহারও করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের এমন দৃষ্টান্তকে ন্যক্কারজনক।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাবেক পুলিশপ্রধান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ভয় দেখিয়ে, জোর করে জমি কিনে নেওয়া এবং তা করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সদস্যদের যোগসাজশের যেসব অভিযোগ আসছে, তা সত্যিই ভয়ংকর। তার এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের কোথাও বিচারপ্রাপ্তির সুযোগও বলপূর্বক প্রতিরুদ্ধ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় মূল অপরাধী ও যোগসাজশকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি ভয়ে বা জিম্মি হয়ে জমি বিক্রিতে বাধ্য হওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।’

সাবেক পুলিশপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ যখন তদন্তাধীন এবং প্রতিনিয়ত নামে-বেনামে নতুন নতুন সম্পদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, তখন সাবেক পুলিশপ্রধানের পরিবারসহ দেশত্যাগ কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ড. জামান বলেন, ‘গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সাবেক পুলিশপ্রধান দেশ ছেড়েছেন এবং দেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থও তুলে নিয়েছেন। এমন বাস্তবতায় তার মতো আলোচিত ব্যক্তির সবার অজান্তে দেশ ছেড়ে যাওয়া সত্যিই অবাক হওয়ার মতো।

তার এই বিদেশে চলে যাওয়ার ঘটনা যোগসাজশের মাধ্যমে হয়েছে কি না, ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন ও তা বিদেশে পাচারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছিল কি না, কিংবা তার বিরুদ্ধে তদন্ত বাস্তবে শুধুই লোকদেখানো কি না-এমন প্রশ্ন ওঠা মোটেও অমূলক নয়। এক্ষেত্রে এটি সুস্পষ্ট যে, ক্ষমতা কাঠামোর একটি নির্দিষ্ট অংশ তাকে সুরক্ষা প্রদান আগেও করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। ফলে সাবেক পুলিশপ্রধানকেই দুর্নীতির দায়ে আইনের আওতায় আনলে হবে না, তাকে সুরক্ষা বা সহযোগিতা প্রদান করা সব ব্যক্তিরই যথাযথ বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!