চুয়াডাঙ্গা জীবননগরে হাফিজা খাতুন (৩৮) নামের এক নার্সকে গলা কেটে হত্যা করে করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিকট মা নার্সিং হোম এন্ড ক্লিনিক এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাফিজা খাতুন একই ক্লিনিকের নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন ও উপজেলার বালিহুদা গ্রামের মো. কবির হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, হাফিজা উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামে মো.সমশের আলীর মেয়ে। তার প্রথম স্বামীর সংসার বিচ্ছেদের পর মা নাসিং হোম এন্ড ক্লিনিকে নার্সের কাজ শুরু করে।প্রথম পক্ষের দুটি সন্তান আছে। যার মধ্যে বড় মেয়ে তার অনেক আগেই বিয়ে হয়ে যায় এবং একটি ছেলে ছেলে সে এখন ৯ম শ্রেনী পড়াশোনা করে। হাফিজা ক্লিনিকেই থাকে। মাঝে মাঝে বাপের বাড়িতে ছেলেকে দেখতে যায়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিয়ে করেন উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা গ্রামে কবির হোসেনের সাথে। তারপর ও হাফিজা দ্বিতীয় স্বামী মাঝে মাঝে ক্লিনিকে আসা যাওয়া করে। বিগত কিছুদিন যাবৎ তাদের মনোমালিন্য ও ঝগড়াঝাটি হচ্ছিল। ঘটনার দিন সকালে ক্লিনিকের ছাদে বাকবিতন্ডা শোনা যায় তারপর থেকে উনার স্বামীকে দেখা যায়। রাত সাড়ে আটার দিকে ক্লিনিকে অন্য স্টাফদের হাঁকডাকে এসে দেখা যায় হাফিজার গলা কাটা লাশ পড়ে আছে।
ক্লিনিকের এক সহকর্মী জানান, রাতে কাজ শেষ করে ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় হাফিজার সাথে আলাপচারিতা পর তৃতীয় তলায় যান তিনি। কিছুক্ষন পর দ্বিতীয় তলায় এসে হাফিজাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন তিনি। কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে জানা নেই। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
তিনি আরও বলেন, সকালে নিহতের স্বামী এই ক্লিনিকে এসেছিলেন। হাফিজার সঙ্গে কোন কারণে বাকবিতণ্ডতা হয়। এরপরই সেখান থেকে তিনি চলে যান।
ক্লিনিকের ম্যানেজার কেয়া জানান, আমার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিউটি। সন্ধ্যার পর ক্লিনিক মালিকের বাসায় থাকি আজ কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার কিছুক্ষণ পর ক্লিনিক থেকে একজন মালিকের বউকে ফোন দিয়ে জানান হাফিজার গলা কাটা লাশ পড়েছিলো তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমরা দ্রুত এসে তাকে মৃত দেখতে পায়।
তিনি আরও বলেন, হাফিজা দীর্ঘ দিন যাবৎ এখানে নার্স হিসাবে কাজ করে। রাতেও এখানে থাকে উনার স্বামী মাঝে মাঝে সকাল সন্ধ্যা এখানে আসা যাওয়া করে। তবে আজ সকালে উনারা দু’জন ক্লিনিকের চার তলা ঝগড়া করছিলো। মাঝে মাঝেই শুনি ওদের ঝামেলা হয় তবে কি নিয়ে এসব তিনি জানেন না।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাগবির হাসান বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ (পিপিএম-সেবা) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ক্লিনিক থেকে এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জেনেছি। আমি আমার টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। তদন্ত করে বিস্তারিত বলতে পারব।