ঝালকাঠিতে ‘অভিযান-১০’ নামের লঞ্চে আগুন ক্যানটিন থেকে নয়, ইঞ্জিনের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হয়েছে বলে মনে করছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শাজাহান খান। শনিবার সকালে আগুনে পোড়া লঞ্চ পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে সংবাদগুলো আমরা দেখেছি, সেগুলো আমলে নিয়ে পর্যালোচনা করে এবং লঞ্চটি পরিদর্শন করে কাজ করছে তদন্ত কমিটি।’
এ সময় নৌ মন্ত্রণালয়ের ৭ সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্য এবং জেলা প্রশাসনের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি লঞ্চটি পরিদর্শন করে।
ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান উপপরিচালক কামাল উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘লঞ্চের ৬টি সিলিন্ডারের মধ্যে একটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’
নৌ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক যুগ্ম সচিব তোফায়েল হাসান বলেন, ‘যা কিছু দেখছি, সবই প্রাথমিক তদন্ত। চূড়ান্তভাবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তবে ইঞ্জিনরুমের পাশের ক্যানটিনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে পুরো লঞ্চে আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছিলেন ক্যাবিন বয় ইয়াসিন।
তিনি পুরো ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।
ইয়াসিন বলেন, ‘লঞ্চের নিচতলার পেছনে ইঞ্জিনরুমের পাশেই ক্যানটিন। সেখানে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিনরুমে। সেখানে ১৩ ব্যারেল ডিজেল রাখা ছিল। ডিজেল আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়।
‘ইঞ্জিনরুমের পর আগুন চলে যায় ডেকের দিকে। ডেকের জানালার পর্দা থেকে দোতলায়। সেখানে প্রথমে পারটেক্স বোর্ডের সিলিংয়ে আগুন লাগে। দোতলায় একটি চায়ের দোকান ছিল। ওই চায়ের দোকানের সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়ে আগুন আরও বড় হয়ে যায়। এরপর আগুন যায় তিনতলায়।’
লঞ্চের ক্যাবিন বয় জানান, আগুন লাগার পর ডেকের যাত্রীরা নেভানোর চেষ্টা করেন। অনেকে ছাদে চলে যান। কেউ কেউ নদীতে লাফ দেন।
ঝালকাঠির পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে আগুন লাগে।
এতে এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে, নিখোঁজ শতাধিক। আর আহত অনেককে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, লঞ্চটিতে প্রায় ৪০০ যাত্রী ছিল।
তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলছেন, নৌযানটিতে যাত্রী ছিল ৮০০ থেকে এক হাজার।
খুলনা গেজেট/এনএম