পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে পবিত্র কোরআনের পৃষ্ঠা পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরে ওই ব্যক্তির লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় রাতে পাঞ্জাবের প্রত্যন্ত এলাকা খানেওয়াল জেলার তুলামবায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এই ঘটনায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জনতা এবং হত্যাকাণ্ডে দর্শকের ভূমিকায় থাকা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ইমরান বলেছেন, পিটিয়ে হত্যার এই ঘটনা কঠোর আইনে মোকাবিলা করা হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে।
জানা যায়, এই ঘটনায় সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে অন্যান্য সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
পাঞ্জাব পুলিশের কর্মকর্তা মুনাওয়ার হুসাইন জানান, শনিবার রাতে তুলামবা গ্রামের মসজিদের ইমামের ছেলে ওই ব্যক্তিকে পবিত্র কোরআনের পৃষ্টা পুড়িয়ে ফেলতে দেখেছেন বলে ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার পর গ্রামের বাসিন্দারা মসজিদে এসে জড়ো হন। এ সময় উত্তেজিত জনতা ওই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেওয়া শুরু করে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে অবচেতন অবস্থায় গাছের সাথে বাঁধা পায়। উত্তেজিত গ্রামবাসীরা পুলিশের ওপরও হামলা চালায় বলে দাবি করেন পুলিশ কর্মকর্তা হুসাইন। তিনি বলেন, গ্রামবাসীরা তাকে লাঠিসোটা, কুঠার ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে একটি গাছে ঝুলিয়ে দেয়।
মুনাওয়ার হুসাইন আরও বলেন, পুলিশ এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করা তথ্যের উপর ভিত্তি করে নিহত ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ মুশতাক বলে জানতে পেরেছে। ৫০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে, ধর্ম অবমাননার দায়ে পাকিস্তানের শিয়ালকোটে শ্রীলঙ্কান এক কারখানা ম্যানেজারকে পিটিয়ে এবং পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। সেই সময় ইমরান খান এই ঘটনাকে পাকিস্তানের জন্য লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছিলেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই