খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ পৌষ, ১৪৩১ | ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জাহাজে ৭ খুনে জড়িতদের বিচার দাবিতে সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু
  মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং
সুন্দরের সর্বনাশ!

কে মিথ্যা, ফারহানা না তদন্ত কমিটি?

নিয়ন মতিয়ুল

* ঘটনা ২৬ সেপ্টেম্বরের। ঘটনা তদন্তে দুদিন পর (২৮ সেপ্টেম্বর) সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ৫ সদস্যের কমিটির গঠন করা হলো।

*দুদিন পর (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন স্বেচ্ছায় তার বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করলেন।

* পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর ফারহানা ‘ঢাকা পোস্টকে’ বললেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তিন পদ থেকেই পদত্যাগ করেছি’। যোগ করলেন, ‘আমি কোনো অপরাধ করিনি। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কেন ছেড়ে দেব?

* ফারহানা বিডিনিউজকে বললেন, ‘একজনেরও চুল কাটিনি। কারও চুলে হাতও দিইনি। এরকম ঘটনা ঘটছে কি না, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই নাই।’ এর সঙ্গে যোগ করলেন, ‘আমার কাছে পুরো ব্যাপারটি শুনে অবাক লেগেছে। আমি পত্রিকায় দেখেছি খবরটা।’

* পরদিন (৩০ সেপ্টেম্বর) সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথা জানালেন তদন্ত কমিটির সভাপতি। প্রত্যক্ষদর্শী চার শিক্ষার্থী–কর্মচারীর ভাষ্যে প্রাথমিক সত্যতা পেলেন।

* অফিস সহকারী সজিব সরকার বললেন, ‘ম্যাডাম আমাকে দিয়ে কাঁচি আনিয়ে একে একে ১৩ থেকে ১৪ ছাত্রের চুল হাত দিয়ে টেনে ধরে কেটে দেন’। অফিস সহায়ক আবদুল মালেক বললেন, ‘আমি ম্যাডামকে ছাত্রদের চুল টেনে ধরে কাঁচি দিয়ে কাটতে দেখেছি’।

* ফারহানার বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের একাধিক অভিযোগ পেল কমিটি। চুল কেটে দেওয়া ছাড়াও তার বিরুদ্ধে সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করা, অশ্লীলভাষায় গালাগালির একাধিক অভিযোগ পেল। জুতার শব্দ হলেও তিনি শাসন করেন।

* হাইকোর্ট ভিসি ও রেজিস্ট্রারের কাছে প্রশ্ন করলেন, শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় ফারহানাসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

প্রশ্ন হচ্ছে, শিক্ষক ফারহানা কি মিথ্যা বলছেন? পুরো ব্যাপারটি শুনে নাকি তার অবাক লেগেছে। তিনি পত্রিকায় দেখেছেন খবরটা! তাহলে পরের ঘটনাগুলোর কী ব্যাখ্যা দেবেন তিনি? সত্যিই গণমাধ্যমে তার ‘আধুনিক-স্মার্ট-সুশ্রী’ ছবি দেখে ভাবছিলাম, ফারহানারাই পারবেন কুশিক্ষা আর কুবিশ্বাসে ভরপুর সমাজে আলো জ্বালাতে। কিন্তু!?

(সত্যিই যদি ফাহানা ইয়াসমিনের অপরাধ প্রমাণিত হয়, তাহলে চির সৌন্দর্যের পূজারি জন কিটসের “সুন্দর সত্য, সত্যই সুন্দর, এটিই সব”- অসাধারণ এই বোধ আবারো ধাক্কা খাবে। এক্ষেত্রে ডা. লুৎফর রহমানকে মনে পড়বে, “মানুষের সুন্দর মুখ দেখে আনন্দিত হয়ো না। স্বভাবে যে সুন্দর নয়, দেখতে সুন্দর হলেও তার স্বভাব, তার স্পর্শ, তার রীতিনীতিকে মানুষ ঘৃণা করে। তার সুন্দর মুখে মনুষ্য তৃপ্তি পায় না”।)

(লেখকের ফেসবুক ওয়াল থেকে) 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!