জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৪৯ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটির আংশিক ঘোষণা করেছে বিএনপি। কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন যশোরের কেশবপুরের সন্তান মোস্তাফিজুর রহমান। তিনিসহ এ কমিটিতে কেশবপুরের আরও ২ নেতা জায়গা করে নিয়েছেন। তারা হলেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোকসেদ আলম ও মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চু। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার এ কমিটির অনুমোদন দেন।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান এর আগে এই কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। মোস্তাফিজুর রহমান কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের বগা গ্রামের প্রয়াত সাবদার আলীর ছেলে। তিনি শিক্ষাজীবনে সাগরদাঁড়ি এম এম ইনস্টিটিউশন থেকে এসএসসি পাশ করেন। কেশবপুর কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুযোগ পান। সেখানে পড়াকালীন শহিদুল্লাহ হল থেকে ১৯৯০ সালের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ওই হলের ভারপ্রাপ্ত ভিপির দায়িত্ব পালন করেন। পড়াশোনা শেষেও রাজনীতিতে ছিলেন সক্রিয়। যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ৭ সদস্যের কমিটিতে সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পান মোস্তাফিজুর রহমান। ওই আংশিক কমিটির সদস্যদের নিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিলে মোস্তাফিজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়।
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটিতে ২৮ জন সহ-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া কেশবপুরের মোকসেদ আলম আছেন ৫ নম্বরে এবং মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চুর ক্রমিক নম্বর ১৭।
মোকসেদ আলমের বাড়ি উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের জাহানপুর গ্রামে। তার বাবার নাম কেরামত আলী মোড়ল। শিক্ষাজীবনে তিনি যশোর জেলা স্কুল থেকে এসএসসি ও যশোর সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছেন। এ সময় পড়াশোনাকালীন তিনি ১৯৯২-৯৩ সালে সার্জেন্ট জহরুল হক হল শাখার ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য ছিলেন। পড়াশোনা শেষে রাজনীতির সাথেও ছিলেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যার ফলে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের বিগত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে জায়গা করে নেন এবং এবারের কমিটিতে মোকসেদ আলম সহ-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চু উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের বাগদহা গ্রামের মাস্টার মুজিবুর রহমানের ছেলে। তিনি শিক্ষাজীবনে কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করার পরে যশোর এম এম কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করেন। এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (সন্মান) অর্থনীতি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ (মার্কেটিং) ও এলএলবি সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষানবিশ আইনজীবী। পড়াশোনার মাঝেই মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চু ছাত্রদলের রাজনীতিতে ছিলেন সক্রিয়। নব্বই দশকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথেও ছিলেন তিনি। রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের বিগত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়গা করে নিলেন মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চু। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সামাজিক সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য, যশোর জেলা সমিতি ঢাকার সহসাংগঠনিক সম্পাদক, খুলনা বিভাগীয় সমিতি ঢাকার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কপোতাক্ষ ফোরামের সহ-সভাপতির দায়িত্বে পালন করছেন।
এদিকে কেশবপুরের ৩ নেতা কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ায় তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেশবপুর থানা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিদাতারা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, বিএনপি নেতা কাউন্সিলর মশিয়ার রহমান, কেশবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দিন আলা, সাবেক কাউন্সিলর কুতুব উদ্দিন বিশ্বাস, শেখ শহীদুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক জুলমত আলীসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠণের নেতৃবৃন্দ।
খুলনা গেজেট/এনএম