কৃষক-ক্ষেতমজুরদের ডাকা বনধে মঙ্গলবার সারা ভারত কার্যত অচল হল। এদিন কাতারে কাতারে কৃষক-ক্ষেতমজুর বনধের সমর্থনে রাস্তায় নেমে দিল্লি সহ সারা ভারত স্তব্ধ করে দেয়। পরিবহণ, নৌপরিবহণ চলেনি। ভারতের কৃষি অঞ্চল, গ্রাম-ভারত ও শিল্পাঞ্চলগুলিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে বনধের। বিজেপি-অবিজেপি শাসিত রাজ্যে বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়ে। কৃষক-ক্ষেতমজুরদের একটাই দাবি, ‘অবিলম্বে সর্বনাশা কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে।’
সারাদেশের পাঁচশো কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ এই বনধের ডাক দেয় । আর এই বনধকে একদিকে শ্রমিক সংগঠনগুলি সমর্থন করে, অন্যদিকে বনধকে সমর্থন করে জাতীয় কংগেস, সিপি আই , সিপিআই এম, সিপিআই এম এল (লিবারেশন) আর এসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, এসডিপিআই, পি এফ আই, এস ইউ সি আই, পিডি এস, আর জেডি, জনতা দল(সেকুলার), আকালি দল, এন সিপি। বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়ে দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, মিজোরাম, অরুণাচলপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধূরী বলেন, সারা পৃথিবীতে এতবড় কৃষক আন্দোলন কোথাও হয়নি, এ একটি ইতিহাস। সারা ভারত কৃষক সমন্বয় মোর্চার আহ্বায়ক যোগেন্দ্র যাদব, হান্নান মোল্লা ও অতুল আনজান বলেন, ভারতের সত্তর শতাংশেরও বেশি মানুষ কৃষিজীবী ও ক্ষেতমজুর । তাদেরকে ঠকিয়ে ভারতের বিজেপি সরকার সর্বনাশা কৃষি আইন আনে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই বিল প্রত্যাহার না করা হবে ততক্ষণ লড়াই-আন্দোলন জারি থাকবে। দিল্লি কার্যত অবরুদ্ধ । সেখানে সংসদ ভবনের সামনে কৃষক-ক্ষেতমজুর সমবেত। রেল ও বিমান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। দিল্লি, কলকাতা, মুম্বই- চেন্নাই ছাড়াও ভারতের প্রতিটি রাজধানী শহর, জেলা শহর, মহকুমা শহর ও থানা শহরে বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এই বনধকে সাধারণ মানুষ সমর্থন দিয়েছে বলেই বনধ সফল হয়েছে। সারা পৃথিবীর নজর কেড়েছে । বনধ সফল হওয়ায় ভারতবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ।
এদিকে এই বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। পশ্চিমবঙ্গে চা- শিল্প এলাকা, বারাকপুর, হুগলী, হাওড়া , আসানসোল শিল্পাঞ্চল গুলি অচল হয়ে যায় । হাওড়া, শিয়ালদা ও কলকাতা স্টেশনের বিভিন্ন শাখায় কৃষক- ক্ষেতমজুররা রেল অবরোধ করেন। কলকাতার সঙ্গে শিলিগুড়ির সংযোগকারী ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অচল করে দেয় বনধ সমর্থকরা। বহরমপুর, পলশুণ্ডার মোড়, রঘুনাথগঞ্জ পুঠিয়া মোড়, ধুলিয়ান, ফারাক্কা, শিলিগুড়ি ৩৪ নম্বর জাঅ সড়ক অচল করে দেয় সিপি আইএম- কংগ্রেস ও এসডিপিআই সমর্থকরা। কলকাতাতেও বাম দলগুলি ও কংগ্রেস যৌথভাবে মিছিল বের করে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বন্ধ সফল হওয়ায় রাজ্যের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/কেএম