খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে ৪ বছরের মেয়াদকাল শেষ করলেন প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন। ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে তার মেয়াদ ১২ আগস্ট থাকলেও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ১১ আগস্ট বৃস্পতিবার বিকেল ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে তার শেষ কার্যদিবস সমাপ্ত করেন।
উল্লেখ্য, কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে ৪ বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছিলেন। বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভা কক্ষে বিদায়ী মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন-এর সভাপতিত্বে বিশ^বিদ্যালয়ের -সকল অনুষদের ডিন, ইনষ্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোষ্ট, পরিচালক, চেয়ারম্যান ও দপ্তর প্রধানগনের সমন্বয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিকতার সাথে সফলভাবে ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে তার ৪ বছরের মেয়াদকাল শেষের কার্যদিবসে বিকাল ৫ টায় বিদায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর-কে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, র্কমচারী ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়।
উল্লেখ্য, তার ৪ বছরের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্বের মেয়াদে কুয়েট ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) বাস্তবায়নে ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তৃতীয় স্থান অবস্থান করে। নাসার স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় কুয়েট শিক্ষার্থীদের টিম। বিশ^বিদ্যালয়ে চালু করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’। ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর’- নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যা প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম এবং পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪র্থ। বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম স¤প্রসারণ ও আদান-প্রদানের লক্ষ্যে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কুয়েটের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) চুক্তিসহ উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। করোনা মহামারীতে অনলাইনে ক্লাশ ও পরীক্ষা চালুর মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম সচল ছিল ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে স্বাভাবিক ছিল। কুয়েটে এলামনাই এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করা হয়েছে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্নার। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জ্ঞান ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও প্রশিক্ষণের আয়োজন। অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার ও কনফারেন্স। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন পাশাপাশি হাই ইমপ্যাক্ট জার্নালে রিসার্চ পেপার প্রকাশের জন্য কুয়েটে প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছে ভাইস-চ্যান্সেলর এ্যাওয়ার্ড। মুজিব শতবর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হয়েছে সংবর্ধনা এবং প্রকাশিত হয়েছে মুজিববর্ষের স্মরণীকা ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’।
শেষ কার্যদিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ভাইস-চ্যান্সেলর পদে আমাকে ৪ বছর কাজ করার সুযোগ দেয়ার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি আরো বলেন, আমার দায়িত্বকালে আমি শিক্ষকতার জায়গা থেকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ ঠিক রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবিক প্রয়োগ ঘটানোর চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশের ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৫তম অর্থনীতির দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী, সমৃদ্ধ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সর্বোপরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর স্বপ্নের সুখী, সমৃদ্ধশালী, সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপিঠ কুয়েট আগামীতে উন্নত ও উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ার কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি। গত ৪ বছরে সুষ্ঠুভাবে বিশ^বিদ্যালয় পরিচালনায় যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।