খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৯ জানুয়ারী থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে। ০৭ জানুয়ারি হল খুলবে। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সিন্ডিকেটের সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
এছাড়াও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিকাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক ও লালনশাহ হলের প্রভোস্ট সেলিম মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ৫ কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন বলেও জানানো হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়।
অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ৩ ডিসেম্বরের সিন্ডিকেট সভায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এদিন বিকেল চারটার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ পেয়ে সাতটি হলে থাকা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী হল ছাড়েন।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে মারা যান অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও ছাত্ররা জানান, লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ফজলুল হক হলের বর্ডার কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার অনুগতদের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচিত করার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দিয়ে আসছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিমকে জেরা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা তার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
ব্যক্তিগত কক্ষ থেকে বেরিয়ে ড. সেলিম দুপুরের খাবার খেতে ক্যাম্পাস থেকে নিজ বাসায় যান। দুপুর আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগ ওঠে, দাফতরিক কক্ষে কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কিছু সাধারণ ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে ড. সেলিমের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে দুদফায় কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে ২ ডিসেম্বর দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা।
অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে গত ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় কুয়েট ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা এবং ওই দিন বিকাল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
সেলিম হোসেনের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর ঘটনায় ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই