খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুইজন নিহত
  মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭
  সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ
  সিইসিসহ নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শপথ আজ

কুরআন যেভাবে অভিবাদন জানাতে শেখায়

মুফতি সাআদ আহমাদ

অভিবাদন, সম্ভাষণ বা শুভেচ্ছা বিনিময়। আমাদের জীবনের খুব নিয়মিত একটা বিষয়। প্রতিনিয়তই বাসা, অফিস কিংবা রাস্তা-ঘাটে এর চর্চা করতে হয়। সাক্ষাৎ পর্বে সাধারণত আমরা “হাই”, “হ্যালো” বলে শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকি। এছাড়া “গুড মর্নিং, ইভিনিং” “গুড ডে, গুড নাইট” শব্দগুলিও আমাদের বেশ পরিচিত।

অর্থের বিবেচনায় শব্দগুলি কিছুটা সাংকেতিক এবং আশীর্বাদবহ। তবে এরচেয়ে আরো বেশি মুগ্ধকর ও প্রার্থনাসূচক অভিবাদনের রীতি ইসলাম ধর্মে রয়েছে । “আস সালামু আলাইকুম”। এতে আছে শান্তিকামনা। রয়েছে সম্বোধিত ব্যক্তির জন্য নিরাপত্তার প্রার্থনা। পবিত্র কুরআনে এভাবে সালামের মাধ্যমে অভিবাদন জ্ঞাপনের বিষয়ে বেশ কয়েকটি মৌলিক তাৎপর্য উল্লেখ করা হয়েছে। যা অন্য সকল শুভেচ্ছা রীতি হতে সালামকে অনন্য করে তুলেছে।

প্রথমত মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সালামের বিষয়টিকে নিজের দিকে সম্বন্ধপূর্বক উল্লেখ করেছেন । সালাম প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর মন্তব্য হলো “তাহিয়্যাতুন মিন ইনদিল্লাহ” অর্থাৎ ইহা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত তাদের আপোষে শুভেচ্ছা বিনিময় বাক্য। সুতরাং সৃষ্টিকর্তা নিজেই যখন আমাদের অভিবাদন জ্ঞাপনের জন্য এ বাক্যটি নির্বাচন করেছেন এর চেয়ে উত্তম কিছু আর কি হতে পারে! (সুরা নুর-৬১)।

দ্বিতীয়ত পবিত্র কুরআনে অভিবাদন জ্ঞাপনের এই রীতি তথা সালামকে “মুবারাকাহ” তথা বরকতপূর্ণ ও “তাইয়্যিবাহ” তথা পবিত্র শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। কারো সাথে সাক্ষাত কিংবা বিদায়ের সময় এই মুবারক পবিত্র শব্দগুলি তার জন্য অনেক কল্যাণকর হতে পারে। যা অন্য সব শুভেচ্ছা জ্ঞাপক বাক্য থেকে সালামকে বহু গুণে তাৎপর্য মন্ডিত করে তুলেছে। (সুরা নুর-৬১)

তৃতীয় বিষয়টি আরো বেশী কৌতূহলী। এটা প্রত্যেক মুমিনের হৃয়য়ের কামনা, যেন আমরা জান্নাতবাসী হই। আর জান্নাতের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হবে এই যে, তা সব সময় সালামের এই শব্দগুলি দ্বারা মুখরিত থাকবে। ঠিক এই কথার সুসংবাদ মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এভাবে দিয়েছেন। “জান্নাতীগণ সেখানে কোন অহেতুক বা মিথ্যা কথা শুনবে না। বরং সেখানে শুধু সালাম আর সালামই গুঞ্জরিত হতে থাকবে। সুতরাং সালামের ব্যাপক চার্চাকে আমরা জান্নাতের নমুনা বলতে পারি।

প্রিয় নবীজি সা. এর হিজরতের প্রথম দিনের কথাও তাই। তিনি সেদিন মদীনাতে এসেছেন মাত্র। দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে উদৃষ্ট ব্যক্তির সাক্ষাতে যেমন মনটা অস্থির হয়ে থাকে মদীনাবাসীর অবস্থাও তার চেয়ে কম নয়। দলে দলে সবাই দেখার জন্য ভিড় করেছে আরবের নবী মুহাম্মাদকে। অসংখ্য লোকের ভিড়ে একটু মাথা ঠেলে দেখার চেষ্টা। অবশেষে সে আশা পূরণ হল আব্দুল্লাহর। আহ! কি জাদু মাখা চেহারা। এই চেহারা কোন মিথ্যুকের চেহারা নয়। একটু পরেই নবীজির উষ্ণ ঠোট দুটি নড়ে উঠলো। তিনি উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে লোক সকল, তোমরা অধিকহারে সালামের প্রচলন কর।

মদীনায় আগমনের পর নবীজির প্রথম কথা। প্রথম হেদায়েত। প্রথম নির্দেশনা। মদীনাকে সালামের শহর বানিয়ে ফেল। সর্বত্র সালামের পরিবেশ গড়ে তোলো। কারণ সালামের পরিবেশ হলো জান্নাতের পরিবেশ।

(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়িগেট, খুলনা)

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!